পরিচয় পর্বটা ছিল বেশ নাটকীয়। বান্ধবীর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন সানজিদা নাহার সিজা। হঠাৎ চলতে গিয়ে ছিঁড়ে যায় তার স্যান্ডেল। রোকেয়া হলের সামনে তা সেলাই করার সময় দেখেন পাশেই সুদর্শন একটি ছেলে। তার পায়ে নোংরা ও ছিঁড়া জুতা। এই নিয়ে হাসাহাসি করেন দুই বান্ধবী। আগ্রহ জন্মায় ছেলেটির। নাম তার মাছুদুর রহমান মাসুদ।
সেই ২০১৩ সালের ঘটনা। তখন থেকেই পরিচয়। সেই থেকেই জড়িয়ে পড়েন প্রেমের সম্পর্কে। মাসুদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
যত দিন যায় তত বাড়তে থাকে দু’জনের জন্য দু’জনের টান। তবে তাদের ভালোবাসার সম্পর্কেও ছিল বিচ্ছেদের সুর। মনোমালিন্য হয় বেশ কয়েকবার। ভালোবাসা ও বিশ্বাসে তারা কাটিয়ে ওঠেন তা। এরই মাঝে বছর দু’য়েকের মাথায় সিজার বাড়ি থেকে আসতে থাকে বিয়ের চাপ। তখনই জানিয়ে দেন সম্পর্কের বিষয়টি। মোকাবিলা করতে হয় পরিবারের সেই চাপকে। তবে শত বাধাতেও তারা ছাড়েননি দু’জন দু’জনার হাত।
২০১৬ সালে সিজার জীবনে আসে কালো মেঘ। হারিয়ে ফেলেন মূল্যবান সম্পদ মা’কে। সিজা বলেন, তখন আমি অনেক বেশি ভেঙে পড়ি। কারণ সে সময়ই মাসুদ তাকে জানায়, বিয়ের আগ্রহের কথা। ২০১৭ সালের অক্টোবরে হয় আক্দ। আর বিয়ে ডিসেম্বরে।
সিজা রহমান জানান, বিবাহিত জীবন ভালোই কাটছে তাদের। দু’জন দু’জনের ভালোবাসায় অন্তঃপ্রাণ। মাসুদ বলেন, ভালোবাসার বিয়ে হোক কিংবা পারিবারিক বিয়ে। চাই দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব। ভালোবাসা। তবে আমি বলবো, প্রেমের বিয়েতে বোঝাপড়া ভালো হওয়াতে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্বটাও গড়ে ওঠে বেশ।
এই দম্পতির কাছে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, জীবনের বাকি সময়গুলো যাতে আমরা একজন আরেকজনের জীবনের ছায়া হয়ে থাকতে পারি। জীবনের একটাই প্রত্যাশা কখনো যাতে আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট না হয়। মাসুদ বর্তমানে কর্মরত আছেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ও সিজা একজন গৃহিণী।