× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয় বিএনপি জানে না: রিজভী

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ এপ্রিল ২০১৯, শুক্রবার

খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছেন বলে কতিপয় মিডিয়া যে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে সে বিষয়ে বিএনপি নেতারা কিছু জানে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক  সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় সূত্রবিহীন একটি খবর ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে যে, চারবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্যারোলে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। এমনকি তারা তারিখও বলে দিচ্ছেন! কিন্তু বাস্তবতা হলো-বিএনপির কোনো সূত্র এমন কিছুই জানে না। অথচ সরকারপন্থি কয়েকটি মিডিয়া প্রতিদিন মনগড়া প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডাগুলোর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও জড়িত বলে ব্যাপক গুঞ্জন আছে। রিজভী বলেন, দেশনেত্রী প্রচণ্ড অসুস্থ। তা নিয়ে এই মিডিয়াগুলো নীরব।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন শারীরিকভাবে খুবই বিপর্যস্ত। হাত-পা নাড়তে পারছেন না। আর্থ্রাইটিসের ব্যাথার কারণে পা নাড়াতে পারছেন না। তাকে সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। গতকালও চিকিৎসকরা বলেছেন তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এই অবস্থায় দেশনেত্রী চাচ্ছেন তার পছন্দমতো বিশেষায়িত  হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এই অবৈধ সরকার তার জীবন হুমকির মুখে ফেলে সুদূরপ্রসারী স্বার্থ সিদ্ধির ষড়যন্ত্র অব্যহত রেখেছে। অন্যদিকে প্যারোল নিয়ে সরকারি মিশন সাকসেসফুল করার জন্য ক্ষমতাসীনরা চতুর রাজনীতিতে লিপ্ত রয়েছে। বিএনপির এ নেতা বলেন, আইনজীবীরা বলেছেন- দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে যে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে তা সহজ জামিনযোগ্য। আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক পথে জামিনে মুক্তি চান তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো- দেশনেত্রীকে নিয়ে মাইনাস ফর্মুলা বন্ধ করুন। ওয়ান-ইলেভেনের সরকার মাইনাস-টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু জনগণের প্রাণপ্রিয় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার আপসহীন কঠোর ভূমিকায় তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। তারা সফল হলে আজ আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। এ সময় তিনি বলেন, প্যারোলের নামে মাইনাসতত্ত্বের অশুভ চক্রান্ত করে লাভ হবে না। তার জামিনে আর বাধা দেবেন না। আদালতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। আদালতের ওপর থেকে অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ হলেই আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে বেরিয়ে আসবেন। আইনকে তার নিজের গতিতে চলতে দিন। অপতৎপরতা বন্ধ না করলে আখেরে আপনাদেরকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। পরের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেকেই সেই গর্তে পতিত হতে হয়- এটা কেবল প্রবাদ নয়, বাস্তব। সুতরাং দেশনেত্রী ও বিএনপিকে নিয়ে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। আপনাদের প্রতি দেশের জনগণ এমনিতেই চরম ক্ষিপ্ত। চক্রান্ত করলে জনগণ উপযুক্ত জবাব দেবে। রিজভী বলেন, দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই- অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, মধ্যরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতার মসনদ দখলে রাখা অবৈধ সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের লাশের ওপর দেশ চালাচ্ছেন। তাই কোন কিছুই এখন যেন তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। দেশে চলছে এক চরম নৈরাজ্য এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি। দেশে কোনো সরকার আছে বলে অনুমিত হচ্ছে না। খুন-ধর্ষণ-লুটপাটে মত্ত হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। পুলিশ প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা রাতের ভোটে ব্যালট বাক্স ভরে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে তারাও বেপরোয়া হয়ে গেছেন। সরকারকে পরোয়া করছে না। নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
প্রতিদিন প্রাত্যহিক খবরের কাগজগুলোর পাতা ভরে থাকছে খুন, ধর্ষণ, পাশবিক নিপীড়নসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক ঘটনায়। দেশে যেন ধর্ষণের উৎসব চলছে। নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শিশু, কিশোরী কিংবা বয়স্ক নারী কেউ নিরাপদ নন। প্রতিদিনই শিশু, কিশোরী ও বয়স্ক মহিলারা বর্বরতার শিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, পাশবিক নির্যাতনের পর তাদের হত্যা করা হচ্ছে। গণপরিবহনে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, স্কুল-কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে, অফিসে কিংবা বাসা-বাড়িতে, রাস্তাঘাটে সর্বত্রই নারী ও শিশুরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছেন। তারা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন বাসে, ট্রাকে, ট্রেনে, বাসাবাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে। কোথাও নারী-শিশু নিরাপদ নয়। তিন বছরের কন্যা শিশু থেকে শুরু করে ৬০ বছরের বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধী নারী, কেউই বাদ যাচ্ছে না। আর প্রতিটি ঘটনা ঘটাচ্ছে এই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। নাৎসীবাদের এই অবিস্মরণীয় মূর্তি এদেশে আর কখনোই দেখা যায়নি। এগুলি গণতন্ত্র হত্যার বিজয় অভিযানের বাই-প্রোডাক্ট। রিজভী আহমেদ বলেন, যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। সেখানকার  অন্ধকারের ভোটের এমপি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং পুলিশের সহযোগিতায় মাদরাসার অধ্যক্ষ ওলামালীগ নেতা সিরাজ উদ দৌলা অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল দিনের পর দিন। অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনের জ্ঞাতসারে পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলমের টাকায় ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদত হোসেন শামীম ও ছাত্রলীগ নেতা নুরুদ্দিনের সক্রিয় অংশগ্রহণে সরকারি দলের আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা প্রভাবশালীরা পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটিয়েছে। সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, আহমেদ আযম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক শামিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর