মাগুরা সদর উপজেলার রামাদারগাতি গ্রামে মহাজনী সুদের কারবারের শিকার হয়ে সুব্রত প্রামাণিক (৩৫) নামে এক সবজি বিক্রেতার আত্মহত্যার ঘটনায় নায়েব আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে সদর থানা পুলিশ সদর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকা থেকে তাকে আটক করে। এলাকায় সে একজন সুদ কারবারি মহাজন হিসেবে চিহ্নিত। আত্মহত্যার শিকার সুব্রত প্রামাণিকের স্ত্রী পূর্ণিমা প্রামাণিক এ ঘটনায় স্বামী সুব্রতের মৃত্যুর জন্য নায়েব আলীকে দায়ী করে মাগুরা সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুব্রতের স্ত্রী পূর্র্ণিমা প্রামাণিকসহ এলাকার অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী গোয়ালবাথান গ্রামের নায়েব আলীর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৩০ হাজার টাকা ধার নেয় সুব্রত। যার বিপরীতে প্রতি সপ্তাহে ৩ হাজার টাকা সুদ দিতে হতো নায়েবকে। গত কয়েক সপ্তাহে সুদের টাকা শোধ দিতে না পারায় সুব্রতের কাছ থেকে বসতভিটা লিখে নেয় নায়েব। পাশাপাশি আরো ৩ লক্ষাধিক টাকা পাওনা রয়েছে বলে নায়েব দাবি করে।
এ টাকা আদায়ের জন্য সে সুব্রতকে ক্রমাগতভাবে চাপ দিয়ে আসছিল। এরই একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকালে সুব্রতের কাছে থাকা নগদ কিছু টাকা কেড়ে নেয় সে। যে টাকা নিয়ে সুব্রত মাগুরা কাঁচাবাজারে পাইকারি দরে সবজি কিনতে যাচ্ছিল। এগুলো বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে সে কোনোরকমে জীবিকা নির্বাহ করতো। শেষ সম্বল হিসাবে থাকা এই টাকা কেড়ে নেয়ার এ ঘটনায় দিশাহারা হয়ে সুব্রত কীটনাশক পান করলে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মারা যান। মাগুরা সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক রাজাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নায়েব আলীর সুদ কারবারির ফাঁদে পড়ে সঞ্জয় দাস, সনজিৎ দাস, বাবলু মোল্যা, বাদল মোল্যা, উজ্জ্বল সরদার, শরিফুল ইসলাম, ডাবলু মোল্যাসহ রামাদারগাতি ও গোয়ালবাথান এলাকার অন্তত ২৫ জন গত ৫ বছরে বসতবাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। তারা নায়েব আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। মাগুরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সুব্রতের স্ত্রীর লিখিত অভিযোগ থানায় দিয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে সুদ কারবারি নায়েবকে আটক করা হয়েছে।