× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মাদকাসক্তদের কাছে নিরাপদ নয় পরিবারের সদস্যরাও!

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
২০ এপ্রিল ২০১৯, শনিবার

 মাদকাসক্তির ক্ষতিকর প্রভাবে দিন দিন অনিরাপদ হয়ে উঠছে পরিবার। সামপ্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া দুটি হত্যাকাণ্ডসহ কয়েকটি ঘটনা- এ কথারই প্রমাণ দেয়।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, গত বুধবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন করমপাড়া এলাকায় জোহরা কলোনিতে মাদকাসক্ত ছোট ভাই মুন্নার (১৯) ছুরিকাঘাতে খুন হন বড় ভাই মাদকাসক্ত সাজু মিয়া (২৮)।
এর তিনদিন আগে গত ১৪ই এপ্রিল মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হন পিতা। ওই দিন ভোর ৬টায় পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে পিতা রঞ্জন বড়ুয়া (৫২) কে ছুরিকাঘাতে খুন করে ছেলে রবিন বড়ুয়া। কোতোয়ালি থানাধীন কাজীর দেউরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মা-বাবা পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার আরও চারটি ঘটনা রয়েছে চলতি মাসে। যা পুলিশ প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছে।
তিনি বলেন, মাদকাসক্ত ছেলের কারনে চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে মা-বাবারা গুমড়ে মরছে। মাদকাসক্ত স্বামীর কারণে অসহায় গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
মাদকাসক্ত বাবার কারনে ছেলে-মেয়ে ও পরিবার পরিজন চরম আতঙ্ক আর হতাশা নিয়ে জীবন যাপন করছে। এমন পরিবারের সংখ্যা এখন অগণিত।
পুলিশ কমিশনার বলেন, মাদকাসক্তির কারণে নৈতিক অবক্ষয়, সামাজিক শৃঙ্খল ভেঙে পড়া, অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাওয়া এসব নিয়ে চট্টগ্রামে অনেকদিন ধরেই আলোচনা চলছে। এ ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে থানায়-থানায় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সভা-সমাবেশ করে আসছে সিএমপি। এমনকি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররাও প্রতিটি ওয়ার্ড ও মহল্লায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে মাদক বিরোধী সভা-সমাবেশ করে আসছে। এরপরও কমছে না মাদক পাচার ও সেবন।
চান্দগাও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বশার জানান, মাদক ব্যবসা নিয়ে দুই ভাইয়ের কথা কাটাকাটির জের ধরে গত ১৭ই এপ্রিল সাজুকে হত্যা করে মুন্না। এ ঘটনায় হালিশহর এলাকা থেকে মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
১৪ই এপ্রিল কোতোয়ালি থানাধীন কাজীর দেউরি এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হন পিতা। ওই দিন ভোর ৬টায় পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে পিতা রঞ্জন বড়ুয়া (৫২) কে ছুরিকাঘাতে খুন করে ছেলে রবিন বড়ুয়া।
ওইদিনই নগরীর ব্যাটারি গলি থেকে রবিন বড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামান জানান, রবিনের মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা রঞ্জন বড়ুয়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকেই মাদকাসক্ত রবিন। প্রায়ই তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া হতো। মাদকের জন্য টাকা না পেয়ে পিতাকে খুন করে রবিন।
এর আগে ৭ই এপ্রিল নগরীর বায়েজীদ থানা এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এর তিন দিন আগে ডবলমুরিং থানার এক মা মাদকাসক্ত সন্তানকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। চলতি মাসের ১৮ দিনে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে দুটি হত্যা ও পুলিশের হাতে চার মাদকাসক্ত ছেলেকে তুলে দেয়ার ঘটনা নগর জীবনকে দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে।
সিএমপির উপ কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বলেন, হত্যকান্ডের পর আসামিরা দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু এটাতো সমাধান না। আমাদের গোড়া থেকেই এই সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য আমরা সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোড় দিতে চাই।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) বিজয় বাসাক বলেন, মাদকাসক্তদের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। ওদের মধ্যে কাউকে আলাদা করে দেখার মানসিকতাও থাকে না। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একক তৎপরতায় এই সমস্যা সমাধান হবে না। সমাজের সব স্তর থেকে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এর মোকাবেলা করতে হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর