হকি ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে দু’পক্ষ। ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখি দেশের দুই প্রধান ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনী। যদিও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইটা হচ্ছে মোহামেডানের কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাউন্সিলর আবদুস সাদেকের মধ্যে। তবে আবদুস সাদেকের গায়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জার্সি হলেও তিনি আসলে আবাহনীরই প্রার্থী। গুঞ্জন রয়েছে আবাহনীর প্রার্থী হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন সাদেক! এরইমধ্যে জেলা ও বিভাগীয় পরিষদের সমর্থন পেয়েছেন এই বর্ষিয়ান ক্রীড়া সংগঠক। সাদেককে সাধারণ সম্পাদ করে সমঝোতার একটি প্যানেল করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কয়েকজন মন্ত্রী। কিন্তু তাতে রাজি হননি সাঈদ। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়েও সংশয়ে মোহামেডানের এই কাউন্সিলর। নির্বাচন বানচালে নানা রকম সন্দেহের কথা জানান তিনি।
হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আগামী ২৯ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কিংবা বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনে। নিরাপত্তার অজুহাতে এই নির্বাচনকে ফ্যালকন হলে নেয়ার আবেদন করেছেন আবদুস সাদেক। এ নিয়ে
সাঈদ বলেন, আমি আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মকাণ্ডে নির্বাচন বানচালের গন্ধ পাচ্ছি। ভরাডুবির ভয়ে তারা চাচ্ছে না নির্বাচনটা হোক। অতীতেও তারা একাধিকবার বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন স্থগিত করেছে’। নির্বাচন স্থগিত হলে কার লাভ জানতে চাইলে সাঈদ বলেন, যে বিষয় নিয়ে হাইকোর্ট হকির নির্বাচন স্থগিত করেছিল, তার কিন্তু সুরাহা হয়নি। বিষয়টির সুরাহা না করেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এমন সময়ে নির্বাচন দিলো, যার ক’দিন পরেই রোজা। কোনো কারণে নির্বাচন স্থগিত করা গেলে রমজানের অযুহাতে তা আরো পেছানো যাবে। ২০১৭ সালে নানা নাটকীয়তার পর বন্যার অজুহাতে নির্বাচন স্থগিত করেছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। পরে এশিয়া কাপের অজুহাতে আবদুস সাদেককে সাধারণ সম্পাদক করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে দেয় ক্রীড়াঙ্গনের এই অভিভাবক সংস্থাটি।
হকির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। এরপর ২০১০ সালে একটি প্যানেল হওয়াতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক হন খন্দকার জামিল উদ্দিন। ২০১৩ সালে শফিউল্লাহ মুনীর বয়কট করলে খাজা রহমতউল্লাহ সাধারণ সম্পাদক হন। এবার দীর্ঘ ১৪ বছর পর ভোটের পরিবেশ তৈরি হলেও ভোট নিয়ে শঙ্কায় আছেন মমিনুল হক সাঈদ। তিনি বলেন, এরইমধ্যে কাউন্সিলরদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। স্বাক্ষর জাল করে গোগালগঞ্জের রতন কুমার রায়ের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে ভোট কেন্দ্র সড়ানোর ষড়যন্ত্র চলছে। এসব কারণেই নির্বাচন নিয়ে আমি ভয়ে আছি। সাঈদের প্যানেলের সহ-সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রশীদ সিকদার বলেন, ‘তারা যেভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে তাতে ২৯ তারিখেই শুধু বলা যাবে ভোট দিতে পারবো কি না। একটা পক্ষ সাদেক ভাইকে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন কাউন্সিলরকে তারা যেভাবে অপমান অপদস্ত করছে সেটির জবাব একমাত্র ব্যালটের মাধ্যমেই দেয়া সম্ভব। কাউন্সিলররা সুযোগের অপেক্ষায় আছে। আমরা নিশ্চিত সুষ্ঠু ভোট হলে রশিদ-সাঈদ প্যানেল বিপুল ভোটে জয়ী হবে।’