গফরগাঁও উপজেলার কালাইপাড়-জালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী (১৪) বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে। ওই ছাত্রী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ধর্ষিতার পিতা বৃহস্পতিবার রাতে তিন জনকে আসামি করে গফরগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ছাত্রীর পরিবার, এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালকের কন্যা স্কুলছাত্রীকে একই গ্রামের জুয়েল মাঝির বখাটে ছেলে হৃদয় (২৩) বাড়িতে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় তার বন্ধুদের সহযোগিতায় ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে। এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই স্কুলছাত্রীকে আরো বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে বখাটে হৃদয়। স্কুলছাত্রী তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানালে, হৃদয় ও তার সহযোগীরা স্কুলছাত্রীর বাবাকে ভিডিও দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে এবং এ নিয়ে কোনো জায়গায় অভিযোগ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ধর্ষণের ধারণকৃত ভিডিও ফেরত দেয়ার কথা বলে হৃদয় তার বন্ধু রাসেলসহ তিন যুবক ওই স্কুলছাত্রীকে ছয়বাড়িয়া গ্রামের আতকা বিলে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় স্কুলছাত্রীর চিৎকারে গ্রামের এক কৃষক এগিয়ে আসলে ধর্ষক হৃদয় ও তার দলবল স্কুলছাত্রীকে রেখে পালিয়ে যায়।
স্কুলছাত্রী জানায়, ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হৃদয় ও তার সহযোগীরা তাকে বেধড়ক মারপিট করে। এসব সহ্য করতে না পেরে বাড়িতে ফিরেই ইঁদুর মারার বিষ পান করে স্কুলছাত্রী। এ সময় বাড়ির লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। দরিদ্র পিতা চিকিৎসার ব্যয় ব্যবস্থা করতে না পেরে স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুল আলম স্কুলছাত্রীর চিকিৎসার ব্যয়ভারের ব্যবস্থা করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুল আলম এ জঘন্য ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন, বিষয়টি গফরগাঁও থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
স্কুলছাত্রীর পিতা বলেন, আমরা দরিদ্র ও অসহায় মানুষ। আমার মেয়েকে যারা ধর্ষণ করেছে ও ধর্ষণে সহযোগিতা করেছে আমি তাদের বিচার চাই। গফরগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ খান বলেন, এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।