পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বায়োপিক নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ছবির পরিচালক অবশ্য ছবিটিকে মমতার বায়োপিক বা জীবনীচিত্র বলে মানতে চান নি। ছবিতে কোথাও মমতার নাম নেই। ছবির নাম ‘বাঘিনী’। ক্যাচলাইন, ‘বেঙ্গল টাইগ্রেস’। ছবিটি নির্বাচনের মধ্যেই আগামী ৩রা মে মুক্তি পাওয়ার কথা। ছবিটি ইতিমধ্যেই সেন্সরের ছাড়পত্র পেয়েছে। কিন্তু রাজ্যের বিরোধী রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, নামে কিছু যায় আসে না। ছবিটি আসলে মমতার জীবনীচিত্রই। আর তাই নির্বাচনের সময় এই ছবির মুক্তি আটকাতে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। ছবির পরিচালক বলেছেন, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরাগী। দিদির অনুপ্রেরণা আমার ছবিতে কাজ করেছে। দিদি শব্দটিও ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এটা ওর প্রামাণ্য জীবনীচিত্র নয়। আমি তা তৈরিও করিনি। বিরোধীরা অবশ্য বলেছেন, ছবির চ িরত্রটি আসলেই মমতার অনুকরণে তৈরি। সেই সঙ্গে মমতার উত্থানের প্রেক্ষাপটও হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটি নিয়ে প্রথমে সিপিআইএম নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে। বিজেপিও রাজ্য নির্বাচনী প্রধানের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছে, এই ছবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনভিত্তিক। তাই নির্বাচনের সময় তা মুক্তি পাওয়া উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জীবনভিত্তিক ছবি মুক্তির ক্ষেত্রে কমিশন যেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ ক্ষেত্রেও তা-ই করা হোক। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট সকলেই জানিয়েছেন, ছবিটিতে মমতার ছায়া পুরোপুরি তুলে ধরা হয়েছে। যদিও ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু তিনি সাদা জমিনের তাঁতের শাড়ি এবং হাওয়াই চটি পরেন। কাঁধে ঝোলা নেন। মাথায় হাতখোঁপা বাঁধেন। বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাকে মাথায় লাঠি খেতে হয়। এক নির্যাতিতা মহিলাকে নিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে যাওয়ার জন্য পুলিশ তাকে জোর করে সেখান থেকে বের করে দেয়ার পরে ‘বাঘিনী’ আঙুল তুলে জানিয়ে আসেন, এক দিন কিন্তু আমি মাথা উঁচু করে এখানে ঢুকবো। আপনারা সেদিন মাথা নিচু করে আমাকে স্যালুট জানাবেন। সিঙ্গুর কথা না থাকলেও জমি আন্দোলনের কথা রয়েছে। রয়েছে ২১শে জুলাইয়ের গুলি চালনার ঘটনাও। ছবির সেই বাঘিনী উপসংহারে নির্বাচনে জিতেছেন দেখানো হলেও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে তাকে দেখানো হয়নি। আরো  মজার বিষয় হলো মমতার চরিত্রে অভিনয় করে যাত্রায় পরিচিত হয়ে ওঠা রুমা চক্রবর্তীই ছবিতে ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।