ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনাসহ নানা অভিযোগে যশোরের মণিরামপুরে মনোয়ারা ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিক বন্ধ ও সিলগালা করেছেন প্রশাসন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান পুলিশ নিয়ে ক্লিনিকটি বন্ধ ঘোষণা করেন। মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুভ্রা রানী দেবনাথ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১১ই এপ্রিল রাতে ভুয়া ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করানোয় ওই ক্লিনিকে উপজেলার জয়পুর গ্রামের সামছুন্নাহার নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় নিহতের স্বামী আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে ক্লিনিকের মালিক, নার্স ও স্টাফসহ ১০ জনের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে গত শনিবার রাতে ক্লিনিকের মালিক কথিত সার্জিক্যাল চিকিৎসক আবদুল হাইকে আটক করে পুলিশ। আবদুল হাই বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন।
এদিকে থানায় দায়ের করা মামলার সূত্রধরে মণিরামপুর থানার সদ্য বিদায়ী ওসি সহিদুল ইসলাম ক্লিনিকটি বন্ধ ঘোষণা করার জন্য যশোরের সিভিল সার্জনকে অনুরোধ করেন। সিভিল সার্জন অফিস বিষয়টি তদন্ত করে ক্লিনিক সিলগালা করার সিদ্ধান্ত নেন। মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, সম্প্রতি মনোয়ারা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ভুয়া চিকিৎসক দিয়ে অপারেশন করানোর বিষয়ে ইউএনওর দপ্তরে একটি অভিযোগ পড়ে।
আবার ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যু নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন। এসব বিষয়ে সিভিল সার্জনের নির্দেশে গত শনিবার হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত হয়। তদন্তে জানা যায় ক্লিনিকের মালিক আবদুল হাই নিজে চিকিৎসক না হয়েও রোগীর অপারেশন করান। তাছাড়া সুব্রত নামের এক ইউনানী চিকিৎসককে এমবিবিএস সাজিয়ে ক্লিনিকে অপারেশন কাজ চালানো হয় বলে জানা গেছে।
শুভ্রা রানী আরো বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. দীলিপ কুমার রায় মনোয়ারা ক্লিনিক সিলগালা করতে ইউএনও অফিসে চিঠি দেন। চিঠি পাওয়ার পর এসিল্যান্ড অভিযান চালিয়ে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেন।