× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টিআইবির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান ওয়াসার /শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত বলতে পারবো না: এমডি

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২১ এপ্রিল ২০১৯, রবিবার

ঢাকা ওয়াসা দুর্নীতিমুক্ত, তবে শতভাগ নয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, আমি বলতে পারবো না যে ঢাকা ওয়াসা শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত। তবে দুর্নীতিমুক্ত এটা বলতে পারি। আমরা দুর্নীতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। এ ছাড়া ঢাকা ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয় বলেও দাবি করেন তিনি। গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন দাবি করেন। ঢাকা ওয়াসার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ট্রান্সপরেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে বক্তব্য তোলে ধরতে এ সংবাদ সস্মেলন করে ওয়াসা। টিআইবির আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ওয়াসার এমডি বলেন, টিআইবির প্রতিবেদন নিম্নমানের, একপেশে ও উদ্দেশ্যমূলক।
এটা কোনো গবেষণার প্রতিবেদনের মধ্যে পড়ে না, এটা একটা রিপোর্টের মতো হয়েছে। এটা নিম্নমানের ও ঢালাও রিপোর্ট। রিপোর্টে টিআইবি নিজেদের পার্সপেক্টিভ উল্লেখ করেছে, এটা গবেষণার মানদণ্ডের মধ্যে পড়ে না।

পানি ফুটাতে গ্যাস জ্বালিয়ে গ্রাহকের ৩৩২ কোটি টাকার অপচয়ের বিষয়ে টিআইবির গবেষণা অনুমান নির্ভর। যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি উৎস থেকে গ্রাহকের জলাধার পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ ও নিরাপদ। সবাই এ পানি ফুটিয়ে খায় এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে তাকসিম এ খান বলেন, জারের পানি ও বোতলজাত পানি তাহলে কোথায় যায়। গ্যাসের অপচয় সম্পর্কে তিনি বলেন, টিআইবির গবেষণায় অপচয়ের কথা বলা হয়েছে কিন্তু রাজস্ব আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে বছরে ৪০০ কোটি টাকা এবং সিস্টেম লস কমানোর মাধ্যমে আরও ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করছে ওয়াসা। এটা টিআইবির গবেষণায় উল্লেখ করা হয়নি।

টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে যা বলেছে তারা কোথা থেকে ডাটা সংগ্রহ করেছে আমাদের জানা নেই। কিন্তু আমাদের পানি শতভাগ সুপেয়। তবুও আমরা সাধারণ মানুষকে ফুটিয়ে খেতে বলি। কারণ পুরাতন পাইপ লাইন এখনো সম্পূর্ণ সংস্কার করা যায়নি। তবে আমরা সব লাইন শিগগিরই সংস্কার করবো।

টিআইবির প্রতিবেদনে ওয়াসার সক্ষমতায় ঘাটতির কথা বলা হয়েছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা শতভাগ সক্ষম। আমাদের সক্ষমতার কোনো অভাব নেই। এছাড়া আমরা সম্পূর্ণ অটোমশনে চলে যাচ্ছি। তাই যেসব পদ খালি রয়েছে সেখানে লোক লাগবে না। কি কারণে খালি রয়েছে তা তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। পানির ঘাটতি সম্পর্কে তিনি বলেন, পানি ঘাটতির যে কথা বলা হয়েছে এটাও সঠিক নয়। আমাদের চাহিদার থেকে বেশি পানি রয়েছে।

ওয়াসা গ্রাহকরা অভিযোগ করেও কোনো সুরহা পায় না বলে টিআইবির প্রতিবেদনের ব্যাপারে এমডি বলেন, ঢাকা ওয়াসা গ্রাহকদের অভিযোগ গ্রহণ করতে অত্যাধুনিক কল সেন্টার (১৬১৬২) চালু করছে। যেখানে গ্রাহকদের প্রতিটি কণ্ঠস্বর রেকর্ড করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। জুলাই ২০১৮ থেকে মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত ১১৩৬৭ অভিযোগ প্রাপ্তির বিপরীতে ১১২০৫ অভিযোগ নিস্পত্তি করা হয়। এটা দিয়েই প্রতিয়মান হয় গ্রাহকরা অভিযোগ করে তার সুফল পেয়েছেন কিনা।
এসময় ওয়াসা এমডি তাকসিম এ খান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন শুকনো মৌসুমে ঢাকার কোনো কোনো এলাকায় পানির আংশিক সমস্যা হয়। তবে তা ক্ষণস্থায়ী। এছাড়া আসন্ন বর্ষা মওসুমে জলাবদ্ধতা নিয়েও প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকায় ২ থেকে আড়াই ঘণ্টার বেশি পানি জমবে না। যদি টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি না হয়।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিআইবি বলছে বস্তি এলাকায় ওয়াসার পানি ঠিকভাবে পৌঁছেনি। এটাও ঠিক না। ঢাকার সকল বস্তি এলাকায় আমরা পানি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। টিআইবি বলছে আপনি ঢাকা ওয়াসায় এক নায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন এটা আপনি সমর্থন করে পদত্যাগ করবেন না-কি টিআইবির বিরুদ্ধে মামলা করবেন ওয়াসা এমডিকে এমন প্রশ্ন করা হলে  পরিচালনা বোর্ডের সদস্য সাবান মাহমুদ বলেন, আমি বোর্ডে আসার পরে দেখেছি তিনি একা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। অনেক সিদ্ধান্ত পরে আছে যা তিনি নিতে পারেননি। তাই তিনি যে এক নায়কতন্ত্র কায়েম করছেন এটা আমি প্রত্যাখ্যান করলাম।

গত বুধবার টিআইবির পক্ষ থেকে ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে বলা হয়, সেবাগ্রহীতাদের ৮৬ দশমিক ২ ভাগ ওয়াসার কর্মচারী এবং ১৫ দশমিক ৮ ভাগ দালালকে ঘুষ দিয়ে থাকেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সিদ্ধ করে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতিবছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর