× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দরকষাকষির ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের বিএনপির নয়: রিজভী

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
২৪ এপ্রিল ২০১৯, বুধবার

অগণতান্ত্রিক সরকারের কাছে দরকষাকষির ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া আপসহীন। যারা আপসহীন, তারা মুক্তির দরকষাকষি করে না। দরকষাকষির দৃষ্টান্ত কার আছে সেটি আওয়ামী নেতারা নিজেরাই জানেন, আর না জানলে আপনাদের নেত্রীকে জিজ্ঞেস করুন। তিনি বলেন, এরশাদের নির্বাচনে যে যাবে সে জাতীয় বেঈমান হবে বলার পর আপনাদের নেত্রী দরকষাকষি করে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। জাতীয় বেঈমানের মুকুট তিনি নিজেই নিজের মাথায় পরে ক্ষমতার হালুয়া-মোরব্বার ভাগ পেয়েছিলেন। কীভাবে একটি অবৈধ ও অসাংবিধানিক ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন সেটিও নিশ্চয়ই আপনারা ভুলে যাননি। অগণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে দরকষাকষি ও দেন-দরবারের ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের, বিএনপি’র নয়।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের একটি বক্তব্যের জবাবে গতকাল দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। হানিফ বলেছিলেন- ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে দরকষাকষি বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’ রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী হিসেবেই জনগণের কাছে প্রতিষ্ঠিত। তিনি কখনো কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি। কোনো স্বৈরাচারের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি। দরকষাকষি তো করে যারা আত্মসমর্পণ করে তারা। যারা আপসহীন থাকে তারা দরকষাকষি করে না। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার উচ্চারণে তারা এগিয়ে যায়। রিজভী বলেন, রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে নির্দোষ খালেদা জিয়াকে যেভাবে বন্দী করে রাখা হয়েছে সেটিই ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজ শেখ হাসিনার কারাগারে বন্দী। দেশের প্রতিটি মানুষ জানে এবং বিশ্বাস করে খালেদা জিয়া নির্দোষ। দেশ থেকে আইনের শাসনকে সমাহিত করে পুলিশী শাসন কায়েম করে অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির আশা-ভরসার প্রতীক খালেদা জিয়াকে আটকে রেখে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা যাবে না। রিজভী বলেন, অবৈধ মিডনাইট সরকার আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মতো পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে সারাদেশে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা ধর্ষণ-নারী নির্যাতন-খুন-দখল ও গুমের উৎসবে মেতে উঠেছে। বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। বিনা ভোটের সরকার কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সবকিছু এখন তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সোনাগাজীর নুসরাতকে নিপীড়ণ চালিয়ে তার মুখ বন্ধ করতে গায়ে আগুন দিয়ে বর্বর কায়দায় হত্যার ঘটনায় সেখানকার আওয়ামী লীগের মিডনাইট এমপি, আওয়ামী সভাপতি থেকে শুরু করে বড় বড় নেতারা জড়িত। তাদের সাথে সহযোগিতা করেছে এসপি থেকে থানার ওসি পর্যন্ত। ফলে তাদের এমপি-নেতা ও পুলিশ প্রশাসনকে জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার। সোনাগাজীর ঘটনার মতোই ক্ষমতাসীন দলের বেপরোয়া নেতাকর্মীরা গোটা দেশকে পরিণত করেছে ধর্ষণ উপত্যকায়। ফলে নারীর প্রতি সহিংসতা এখন ইতিহাসে সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ৭২-৭৫ এর চাইতেও এখন দেশের অবস্থা ভয়াবহ। রিজভী বলেন, অপকর্ম করে নির্বিঘ্ন থাকার জন্য জনগণের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জোর করে বন্দী রেখে বিনা চিকিৎসায় প্রাণনাশের অপচেষ্টা চলছে। বিএসএমএমইউতে রাখা হলেও তাকে সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। শেখ হাসিনার নির্দেশ মতোই তাকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। জামিনে প্রতিবন্ধকতা করা চলবে না। তিনি মুক্তি পেয়ে নিজের পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন। একদলীয় হানাদারী শাসনের অন্ধকার দূর করে আলোর প্রত্যাশায় দেশনেত্রীর মুক্তির প্রহর গুণছে এদেশের জনগণ। রিজভী বলেন, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে ভীষণ অসুস্থ। কয়েক দিন আগে তাকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলেও যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। এটা চরম অমানবিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। অবিলম্বে অসুস্থ লুৎফুজ্জামান বাবরকে চিকিৎসা দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রায় ২০০টি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন লাভের পরও কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে আপিল বিভাগ ১৪টি মামলার জামিন বাতিল করেছেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন মামলায় তাকে জড়ানো হচ্ছে। এক বছর ধরে কারারুদ্ধ সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অসুস্থ হলে পড়লেও কারাকর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়নি। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান, লায়ন আসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল, শেখ রবিউল ইসলাম রবি, শেখ মোহাম্মদ শামীম, শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী, শরিয়তপুর থেকে ধানের শীষের প্রার্থী মিয়া নুর উদ্দিন অপু ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসাহাক সরকারসহ দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন তিনি।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর