সুপেয় পানির দাবিতে ঢাকা ওয়াসার প্রধান কার্যালয়ের সামনে অভিনব প্রতিবাদ জানাতে আসা গ্রাহক মিজানুর রহমান তাকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন। গতকাল ওয়াসার কর্মকর্তারা পানি পরীক্ষার নামে তার বাসায় গিয়ে হেনস্থা ও এক ধরনের হুমকি দিয়ে এসেছেন বলে অভিযোগ করেন মিজানুর। জুরাইন নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান মানবজমিনকে জানান, ওয়াসার লোক পরিচয়ে পাঁচ-ছয় জন তার শ্বশুরের বাসায় যায়। ওই বাসায় মিজানুরের স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই কন্যা সন্তান ছিলেন। শুরুতে মিজানুর রহমান বাসায় ছিলেন না। তিনি বলেন, তারা অনুমতি ছাড়াই বাসায় প্রবেশ করে। ফোনে বিষয়টি জানার পর আমি সেখানে গেলে তারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। অনুমতি ছাড়া বাসায় প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে তারা আমাকে হুমকি-ধমকি দেয়।
তারা এতোটাই ক্ষুব্ধ ছিলো যে, পারলে আমাকে মারে। মিজানুর রহমান বলেন, এসময় তার ভিডিও ধারণ করে। এমনকি তাকে চোর বলে সম্বোধন করে ওয়াসার লোকজন। মিজানুর রহমান জানান, ওয়াসার কাছে আমি আমার বাসার ঠিকানা দিয়ে এসেছিলাম। তারা আমার বাসায় না গিয়ে আমার শ্বশুরের বাসায় গিয়েছে। অথচ পাশেই আমার বাসা। তারা আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই এটি করেছে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে মিজানুরের আগের এবং পরের অভিযোগকে সাজানো নাটক বলে জানিয়েছে ওয়াসা। গতকাল ঢাকা ওয়াসার এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়। এতে বলা হয় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী এবং মতিউর রহমান ও আরও একজন ওয়াসার পানি নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা সর্বৈব মিথ্যা। প্রথমত তারা যে পানি জগে করে ওয়াসা ভবনে নিয়ে আসেন সেটি তাদের বাসার পানি নয়। তাদের উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রকৌশলীকে গতকালই জুরাইন পাঠায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ নবাব আলী উল্লেখিত ঠিকানায় সরেজমিন পরিদর্শনে যান। বিবৃতিতে বলা হয়, উপ-সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ নবাব আলী চাপকল চেপে পানির মান ভাল দেখতে পান। সেখানে সবার উপস্থিতিতে তিনি ও এ.পি.এল.এম সেই পানি পান করেন। পরে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে মিজানুর রহমানের স্ত্রী বলেন, এখন আমাদের পানি ভাল। কিন্তু এলাকার পানির সমস্যা আছে। বিবৃতিতে ওয়াসা বলে,
নগরবাসীকে ঢাকা ওয়াসা এই বলে পুনরায় আশ্বস্ত করতে চায় যে, ঢাকা ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করে তা উৎসে সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবে লাইনের সমস্যার কারণে অথবা গ্রাহকের রিজার্ভার অপরিষ্কার থাকলে কোথাও কোথাও সেই নিরাপদ পানি দূষিত হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ঢাকা ওয়াসা তার সমস্ত পাইপলাইন পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছে। যার প্রায় ৪৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে আর বাকী কাজ চলমান রয়েছে।