× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পুলিশের ৪ সদস্যের গাফিলতি খুঁজে পেয়েছে তদন্ত কমিটি

শেষের পাতা

শুভ্র দেব
২৫ এপ্রিল ২০১৯, বৃহস্পতিবার

সোনাগাজীতে নিহত মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যাকাণ্ডে চার পুলিশের গাফিলতি খুঁজে পেয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি। এই তালিকায় সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ জেলা পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা রয়েছেন। তদন্ত কমিটি এই চার পুলিশের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতি, দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতার অভাব, ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো হয়রানি, জিজ্ঞাসাবাদের নামে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া, যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া ও নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পরেও নিরব ভুমিকার সত্যতা পেয়েছে। চলতি মাসের ভেতরেই তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এছাড়া মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে আরও শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। সব কিছু জেনেও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও স্থানীয় প্রশাসনের নিরব ভুমিকার কারণে তাদেরকেও দায়ী করা হবে। সব কিছু মিলিয়ে অন্তত ২৫ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে শিগগিরই। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।


পুলিশ সদর দপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ডিআইজি রুহুল আমিন মানবজমিনকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে চারদিন অবস্থান করে তদন্ত করেছি। মাদরাসা শিক্ষক, নুসরাতের পরিবারসহ আরো অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের তদন্তে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য অনেকের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছি। এদের মধ্যে সোনাগাজী থানার ওসিসহ জেলা পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ পেয়েছি। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দ্বিতীয় দফায় তদন্ত কমিটির দুইজন কর্মকর্তা আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা পুরো ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করেছি। এখন পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত প্রতিবেদন তাদের বিরুদ্ধেই দেয়া হবে। অভিযুক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন এই ঘটনায় অন্তত চারজন পুলিশের বিরুদ্ধে তাদের কর্তব্য কাজে চরম আন্তরিকতা অভাব ও গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছি। আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করব। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে কিনা বা কি শাস্তি হতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রতিবেদনে আমরা যার বিরুদ্ধে যে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি সেগুলো তুলে ধরব। আশা করছি মে মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিব। আর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আলাদা বিভাগ আছে। প্রতিবেদন দেয়ার পরে সেই বিভাগ হয়তো অভিযুক্তদের ডেকে আনবে। তাদের বক্তব্য শুনবে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবে কি শাস্তি দেয়া হবে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে তদন্ত কমিটি। এদের মধ্যে ওই মাদরাসার শিক্ষক, মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, নুসরাতের পরিবার, স্থানীয় পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছেন। তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদে নুসরাত হত্যাকান্ডে পুলিশ সদস্যদের পাশপাশি অন্তত ২৫ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে। এই সূত্র আরও বলছে, যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে থানায় নুসরাতের মামলা নিতে অনিহা, মামলার পর নুসরাতের নিরাপত্তা, থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া, নুসরাতের গায়ে আগুন দেয়ার পরে ঘটনা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা, টাকার বিনিময়ে অন্যায়কারীর পক্ষ নেয়ার অভিযোগ উঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। আবার ১১ই এপ্রিল ফেনীর এসপি জাহাঙ্গীর আলম নুসরাতের পরিবারকে দায়ী করে একটি চিঠি দেন পুলিশ সদর দপ্তরের বিশেষ শাখা ও চট্টগ্রাম রেঞ্জে। নুসরাতের পরিবার অভিযোগ করে ওসিকে বাঁচাতেই এসপি এই চিঠি দিয়েছেন। এসব অভিযোগ উঠার পরেই পুলিশ সদর দপ্তর পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি করে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর