সংসদে গিয়ে আমার নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানাবো বলে মন্তব্য করেছেন সদস্য শপথ নেয়া বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান জাহিদ।
বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বহিষ্কার হতে পারি জেনেও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমি শপথ নিয়েছি। আমার বিষয়ে দল যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সেটা জেনেশুনেই শপথ গ্রহণ করেছি। দল যদি মনে করে বহিষ্কার করবে- করতেই পারে। বহিষ্কার করলেও কিন্তু আমি দলে আছি। কারণ সংসদ সদস্য হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করেছে এলাকার জনগণ। তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতেই আমি শপথ নিয়েছি।
এটা দলের সিদ্ধান্তের বাইরেই। আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষা করলাম। যেহেতু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি, এলাকার মানুষের প্রচণ্ড চাপ আছে। ঢাকায় এই পনের দিন ধরে আছি, এলাকার মানুষের একটাই বক্তব্য- ‘শপথ নিয়ে ফিরে আসেন’।
এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদুর রহমান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সংসদে যে ভূমিকা রাখা দরকার তা আমি রাখতে চাই। আমার নেত্রী একজন বয়স্ক মহিলা, ৭৩ বছর বয়স। উনাকে যেন গণতন্ত্রের স্বার্থে মুক্ত করে দেয়া হয়, সংসদে এই আহ্বান জানাব। এটাই সংসদ সদস্য হিসেবে আমার প্রথম অঙ্গীকার। আর এলাকার হাজার হাজার নিরাপরাধ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানাব। বলব, আপনি এগুলো দেখেন। এগুলোর বাদী পুলিশ। পুলিশ যা করেছে সব মিথ্যা মামলা করেছে। আপনার লোক কোনো মামলা করেনি। এটা দেখা উচিত। গণতন্ত্রের স্বার্থে সেইসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি রাখব।
সংসদে আসার আগে দীর্ঘ ৩০ বছর মাঠের লড়াইয়ে ছিলেন জানিয়ে জাহিদ বলেন, আমি এবার দিয়ে চতুর্থবার নির্বাচন করলাম। এ আসনটি আমাদের বিএনপির ছিল না। স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনটি আওয়ামী লীগের। এই প্রথম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি বিজয়ী হতে সক্ষম হয়েছে। আমি এই দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। সেই ছাত্র জীবন থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর এই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কাজেই বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি তো বিএনপি থেকে বহিষ্কার হব না। আমি আছি। শপথের বিষয়ে দলের কোনো পর্যায়ে কথা হয়েছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, আগে বলেছি। দেখাও করেছি। কোনো প্রকারের সম্মতি দেয়নি। দল শপথ নেবে না- এখনো পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তই ফাইনাল।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী ৩০০ প্রার্থীর মধ্যে জাহিদকে নিয়ে মোট ২৯৫ জন এ পর্যন্ত শপথ নিয়েছেন। বিএনপি থেকে নির্বাচিত আর পাঁচজন এখনও শপথ নেয়ার বাকি। গত ৩০শে ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোটের ওই ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানালেও তা উপেক্ষা করে গণফোরামের সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান এর আগে শপথ নেন। বিএনপির জাহিদুর রহমানও এবার একই পথে হাঁটলেন।