ক্লাসে আমরা জনাবিশেক শিক্ষার্থী, স্যার এলেন। দুই-চার কথা শেষে বোর্ডে দুই লাইনের এক বিশাল প্রশ্ন লিখলেন। এরপর চেয়ারে বসে গল্প বলা শুরু করলেন। গল্পে গল্পেই কেটে গেল প্রায় পুরোটা সময়। ক্লাস শেষ করার প্রস্তুতি চলছে। হঠাৎ প্রশ্ন করলাম- স্যার, প্রশ্নটা লিখেছিলেন কেন?
উত্তরে পেলাম, ওটা নিয়েই না এতক্ষণ কথা বললাম। আমি প্রশ্নের দিকে তাকিয়ে মাথা চুলকাচ্ছি। স্যার দেখে হাসলেন, এরপর প্রশ্নটাকে কয়েক ভাগে ভেঙে বললেন, এটা নিয়ে কোথায় কথা হয়েছে?
বললাম, স্যার, গল্পের ওই অংশে।
আবার জিজ্ঞেস করলেন, এই অংশটুকু? বললাম, শুরুতে। স্যার বললেন, আর বাকিটুকু তো বুঝতেই পারছ কখন আলোচনা করেছি।
ক্লাসে আমরা সবাই একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। পুরো ক্লাসটাই কি না গল্পে কাটিয়ে দিয়ে গেলেন প্রশ্নের উত্তর! এমনই এক গল্পকার ছিলেন মাহফুজ উল্লাহ স্যার। পড়াতে তো পারেন অনেকেই, কিন্তু গল্পে গল্পে ক্লাস শেষ করা- এও যে সম্ভব, স্যারের ক্লাস না করলে অজানাই থেকে যেত। এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের ক্লাস, অনেকটা সময়। কিন্তু তার উপস্থিতিতে সময়টা ছিল খুবই নগণ্য। ছোটবেলায় অনেকবার শুনেছি, ছাত্রজীবনে এমন শিক্ষক পাবে যাদের ক্লাসে বসে সময় কোথা দিয়ে চলে যাবে টেরও পাবে না। কথাটা সত্য হয়েছে বটে, কিন্তু স্যারের ক্লাসগুলো বোধহয় খুব তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে গেল।