× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আজও নুসরাতের অপেক্ষায়

ষোলো আনা

মো. শফি উল্লাহ, সোনাগাজী (ফেনী) থেকে
১২ মে ২০১৯, রবিবার

মা শিরিন আক্তার। আজও অপেক্ষার প্রহর গুনেন মেয়ে নুসরাত জাহান রাফির। নুসরাতের শয়ন কক্ষের বই, খাতা, কলম আর কাপড়-চোপড়ের মাঝে খুঁজে বেড়ান মেয়ে নুসরাতকে। নুসরাত বেঁচে নেই এটা বিশ্বাস করতে রাজি নন তিনি। মাকে খুব ভালোবাসতেন নুসরাত, তাইতো শয়ন কক্ষের দেয়ালে লাল কাগজে লিখে রেখেছেন ‘মা আমার চোখের মণি’। মাকে নিয়ে দুটি কবিতাও লিখেছেন নুসরাত।

সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির গায়ে অগ্নিসংযোগের পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১ মাস অতিবাহিত হয়েছে। তবে কান্না থামেনি নুসরাতের মমতাময়ী মা শিরিন আক্তারের।

কান্না জড়িয়ে মা বিলাপ করেন, তোরা অ্যাঁর নুসরাতকে আনি দে, ও অ্যাঁর বুকের মণি নুসরাত, ও অ্যাঁর চোখের মণি রাফি, অ্যাঁর শূন্য বুকে ফিরে আয়, ও অ্যাঁর রাফি তুই কই, ও আল্লাহ অ্যাঁরে নিয়ে অ্যাঁর নুসরাতকে ফিরিয়ে দে।

এসব বলে নুসরাতের শয়ন কক্ষে তার খাটের উপর বসে-শুয়ে এইভাবে আহাজারি করছেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। ওই কক্ষে নুসরাত ছাড়া তার কাপড়, বই খাতা, আসবাবপত্র, সবই আছে।
শুধু নেই নুসরাত। আর তারই কক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। নুসরাতকে বুকে জড়িয়ে এ কক্ষেই তিনি ঘুমাতেন।

নুসরাতের খাটে শূন্য বুকে রাত যাপন করছেন মা। কিছুতেই ঘুম আসে না তার। হাজারো স্বজন এসে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কিছুতেই কেউ তার কান্না থামাতে পারছেন না। তার দাবি চোখে ঘুম এলেই যেন নুসরাত তাকে মা বলে ডেকে উঠে। তখনই তিনি নুসরাতকে খুঁজতে থাকেন। কিছুতেই ভুলতে পারছেন না নুসরাতের অতীত স্মৃতি। নুসরাতের স্মৃতি স্মরণ করে বুক থাবড়িয়ে থাবড়িয়ে বিলাপ করছেন শিরিন। আত্মীয় স্বজনেরা যেন তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭শে মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ওই মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেওয়ার লোভ দেখিয়ে জোরপূর্বক যৌন হয়রানির চেষ্টা চালান। একই দিন তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সিরাজের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।

ওই মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ৬ই এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগিরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১০ই এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর