× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বেরোবির ভর্তি পরীক্ষার সোয়া কোটি টাকা বন্টন, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অসন্তোষ

অনলাইন

ইভান চৌধুরী, বেরোবি থেকে
(৪ বছর আগে) মে ১৯, ২০১৯, রবিবার, ১২:৪৮ অপরাহ্ন

চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা থেকে মোট আয়ের উদ্বৃত্ত সোয়া কোটি টাকা শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মাঝে বন্টন করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অর্থের পরিমাণ কমবেশি হওয়ায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ সেশনে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি বাবদ মোট ৩ কোটি ৪২ লাখ ৭০৫ টাকা আয় করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান থেকে ৮ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ কেটে নেয় টেলিটক। টেলিটক মোট আয় থেকে ৮ শতাংশ কেটে নেয়ার পর অবশিষ্ট থাকে ৩ কোটি ১৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। এ অর্থ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে ৪০ শতাংশ হারে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা জমা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার খরচ বাবদ ব্যয় হয় ৭৪ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। সব হিসেবের পর মোট আয়ের অবশিষ্ট ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা। গত সোমবার এই অবশিষ্ট সোয়া কোটি টাকা বন্টন করে দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, এই সোয়া কোটি টাকা থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির আহবায়ক, ডিন ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে সম্মানী বাবদ তিনি পেয়েছেন তিন লক্ষ টাকা। ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল পেয়েছেন ১০ হাজার টাকা। আর বাকি অর্থ অনুষদভিত্তিক ভাগ করে  দেয়া হয়েছে। যে অনুষদে বেশি ফরম বিক্রি হয়েছে সে অনুষদ বেশি পরিমাণ অর্থ পেয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কলা অনুষদ পেয়েছে ২১ লক্ষ ৪২ হাজার ১৪১ টাকা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ৪১ লাখ ২৭ হাজার ২০৯ টাকা, বিজনেস অনুষদ পেয়েছে ১১ লক্ষ ৯৯ হাজার ২৯ টাকা, বিজ্ঞান অনুষদ পেয়েছে  ১৩ লক্ষ ১৩ হাজার ৮৬৮ টাকা, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনৃষদ ৬ লক্ষ ৫ হাজার ২৬৯ টাকা এবং জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদ পেয়েছে  ৭ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৯৯ টাকা।


কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে  কথা বলে জানা যায়, এ বছর সবচেয়ে বেশি অর্থ পেয়েছে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত শিক্ষকরা। তারা গড়ে ৬৫-৭০ হাজার টাকা করে  পেয়েছেন। এই অনুষদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করা এক শিক্ষক একাই পেয়েছেন এক লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। আর সবচেয়ে কম পেয়েছেন বিজনেস অনুষদভুক্ত শিক্ষকরা। তারা গড়ে ৩০-৩৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। এছাড়া কর্মকর্তারা নামমাত্র সম্মানি পেয়েছেন। তুলনামূলক কম টাকা পাওয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন শিক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্বরত প্রত্যেক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে মোটা অংকের কেন্দ্র ফি প্রদান করা হয়। এছাড়া, ওই সময় প্রত্যেক অনুষদ খরচ বাবদ দুই থেকে আড়াই লাখ করে টাকা আগাম গ্রহণ করে থাকে। এরপরেও অবশিষ্ট টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার না করে প্রতিবছর ভাগাভাগি করে নেয়া হচ্ছে। তারা আরও জানান, একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণ করতে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ব্যয় হয়ে থাকে। কিন্তু ফরম পূরণের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। উত্তারাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন ফরম বাবদ এই অধিক অর্থ আয় করে তা ভাগ করে নেয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খন্দকার ইকবাল বাহার বলেন, ভর্তি পরীক্ষা থেকে যে আয় হয় তার মালিক এই বিশ্ববিদ্যালয়। আর, বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা মানে সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবার অংশ রয়েছে। কিন্তু, আয়কৃত অর্থ থেকে শিক্ষার্থীদের কোনো অংশ রাখা হয় না। সামান্য কিছু অংশ বা নামমাত্র কিছু অর্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রদান করে বাকি অর্থ শিক্ষকদের প্রদান করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, শিক্ষকরা যে পরমিাণ পরিশ্রম করেন তার তুলনায় সম্মানি কম পান। তবে, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হলে এ ধরনের প্রশ্ন উঠবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের সহকারী পরিচালক তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, ভর্তি পরীক্ষা বাবদ শিক্ষকদের দীর্ঘদিন বিভিন্ন কাজ করতে হয়। তার পারিশ্রমিক স্বরুপ এই অর্থ তাদেরকে প্রদান করা হয়ে থাকে। এটি মোট আয়-ব্যয়ের অংশ, অতিরিক্ত অংশ নয়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর