× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স নিয়ে জারি করা পরিপত্র অবৈধ

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২০ মে ২০১৯, সোমবার

১৯৭১ সালের ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে সরকার যে পরিপত্র জারি করেছিল তা অবৈধ ও বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮ এর ২ (১১) ধারা অনুযায়ী সরকার কর্তৃক ওই বয়সসীমা নির্ধারণের বিধানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন আদালত। গতকাল  বিচারপতি  শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এর আগে গত বছরের ১৫ই জুলাই বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মাহমুদ হাসানের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিলেন। রায়ের এক পর্যায়ে বেঞ্চের জেষ্ঠ বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণাটি পড়ার একপর্যায়ে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, যে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ভিত্তি করে দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের যদি আমরা অস্বীকার করি তাহলে দেশ হিসেবে আমরা সামনের দিকে এগুতে পারবো না। আদালত বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর কোথাও মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সের ফ্রেমে বাধা যায়না। মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে ভালবাসা ও আবেগের তাড়না থেকে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অনেকেই সাত, আট বছর বয়সেও যুদ্ধ করেছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণে সরকারের ওই বিধানকে ভ্রান্ত উল্লেখ করে হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছেন, এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুক্তিযোদ্ধাদের বয়সের ফ্রেমে বাধা যায় না। পৃথিবীর কোথাও এটি হয়না। রায়ে আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা নতুন করে চালু করাসহ তাদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করতে বলেছে আদালত।

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আদালতের এ আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। আদালতে  রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন ও ওমর সাদাত। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেছুর রহমান। রায়ের পর্যবেক্ষনে আদালত বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেখানে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকলকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়েছিলেন। সেখানে বয়সের কোন কথা উল্লেখ ছিলনা। আদালত বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও বীর প্রতীক খেতাবধারী শহিদুল ইসলাম লালু মাত্র ১০ বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বঙ্গবন্ধু তাকে কোলে তোলে নিয়ে বীর প্রতীক খেতাব দেন। কিন্তু বয়স নির্ধারণ করে দেয়ায় তার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ রয়ে গেছে। এটি মেনে নেয়া যায়না। হাইকোর্ট আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সাড়ে ১২ বছর বয়স নির্ধারণ সংবিধানের প্রস্তবনা ও সংবিধানের পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মুক্তিযোদ্ধা নির্দিষ্ট করতে বয়স নির্ধারণের ওই পরিপত্রকে ভ্রান্ত উল্লেখ করে আদালত বলেন, ‘সরকারের এই পরিপত্রের কারনে মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের বয়স তখন সাড়ে ১২ বছরের কম ছিল তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবে না। কোন রকম চিন্তা ভাবনা না করেই এই বিধানটি করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর