কুঁজা রাজা নামে পরিচিত চাঁপাই নবাবগঞ্জে একটি সরকারি আম বাগানের প্রায় ২ হাজার ৫শ’ গাছের আম বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ৫৫ হাজার টাকায়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। গতকাল দুপুরে প্রকাশ্য ডাকের মাধ্যমে আম গাছগুলো চলতি মৌসুমের জন্য বিক্রি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে কানসাট ইউনিয়ন পরিষদের তহসিলদার মো. নুরুল ইসলাম জানান, কানসাট রাজার বাগানের প্রায় ২৫শ’ গাছের আম ফল প্রকাশ্য নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। সর্বচ্চ দামে বাগানটি কিনে নেন স্থানীয় আম ব্যববসায়ী আবদুল আলিম নামে এক ব্যক্তি। জানা গেছে, কানসাট মৌজার পার কানসাট ও মোবারকপুর ইউনিয়নের স্বীকারপুর মৌজায় প্রায় ৩২ একর ৯৮ জমি রয়েছে। সেখানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার আম গাছ রয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানি আমলেরও বেশকিছু আম গাছ টিকে আছে এখনও।
বাগানটি পরিচর্যা ও দেখভালের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক গাছ মরে পড়ে রয়েছে। তার পরেও বাগানের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় জেলা প্রশাসক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এরপরও ২০১৬-১৭ ও ১৮ সালের তিন বছরের জন্য প্রায় ৫৪ লাখ টাকায় বাগানটি টেন্ডার নেন পার কানসাট এলাকার সোহবুল ইসলাম নামে এক আম ব্যবসায়ী। তারপর হতেই নামেমাত্র মূল্যে বাগানটি বিক্রি করে আসছে জেলা প্রশাসন। বাগানের পাশের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের গাফিলতির কারণে বাগানটি আজ ধ্বংস হতে চলেছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি রাতের আঁধারে বাগানের আম গাছ কেটে নিয়ে যায়। এ ছাড়া সময়মতো বাগানটি পরিচর্যা না করায় অনেক গাছ মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যদি সময়মতো এখনও বাগানটি পরিচর্যা করা হয়-তবে আগের যৌবনে ফিরে আসবে ঐতিহ্যবাহী এই কুঁজা রাজার বাগানটি। সরকারের আয় হবে কোটি কোটি টাকা। তাদের দাবি-প্রশাসন যদি বাগানটি আম মৌসুমের আগে নিলামে বিক্রি করে তবে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এজেডএম নূরুল হক বলেন, বর্তমান সময়ে আমের মূল্য না পাওয়ায় কেউ বাগান লিজ নিতে চাইনি। তবে আগামী মৌসুমের আগেই লিজ দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, কুঁজা রাজার বৃহৎ বাগানটি শিগগিরই পরিদর্শন করে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।