ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা পরিপত্রে আগামী ২৪শে জুন পর্যন্ত তা স্থিতাবস্থা জারি করেছে হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত করা একটি আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি এফএএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি
কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে, ঋন খেলাপিদের বিশেষ সুবিধায় উষ্মা প্রকাশ করে শুনানির সময় হাইকোর্ট বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এভাবে দুষ্টের পালন, শিষ্টের দমন করছে। ব্যাংকগুলোই মূলত ঋন খেলাপিদের সুযোগ করে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো তাদের কথায় চলে।
যারা ঋণ খেলাপি, তাদের পক্ষে কাজ করার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছে। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে পাচার করা হচ্ছে। অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোনো পদক্ষেপ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশ্যই হচ্ছে, যারা লুটপাট করছে, ঋন নিয়ে তা পরিশোধ করছেনা তাদের সমর্থন দেয়া। আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, খেলাপি ঋনের পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এখন যদি তাদের ছাড় দেয়া হয়, তাহলে তারা আরও এক লাখ কোটি টাকা নিয়ে যাবে।’ ব্যাংকগুলো ঋনের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে না আনায় উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার কথা ছিল। কিন্তু তা করেনি। তারা তো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশও মানছে না।
আদালতে আবেদনকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ নিজেই আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে সার্কুলার সেটি গত ১৬ই মে শুনানিতে স্থগিত করার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওই সময় পর্যন্ত সার্কুলার জারি হয়নি।পরে বিকেলেই বাংলাদেশ ব্যাংক এই সার্কুলার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। সেটিই আমরা চ্যালেঞ্জ করে স্থগিত চেয়েছিলাম। এমন প্রেক্ষিতে আমরা আবেদন জানিয়েছিলাম যে, সার্কুলারটা মামলার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখা হোক। আদালত ২৪ জুন পর্যন্ত এ সার্কুলারের কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছে। ওই দিন পরবর্তী আদেশ হবে।
এর আগে ১৬ মে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চ এক আদেশে গত ২০ বছরে এক কোটি টাকার ওপরে ঋন খেলাপির তালিকা ২৪ জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জমা দিতে নির্দেশ দেয়।