চকরিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আকস্মিক অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করেন। গতকাল সকাল ১০টা থেক দুপুর ১টা পর্যন্ত অভিযানে হাসপাতালের নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে দুদক।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যানবিদ আমির হামজা ২০০৬ সালে হাসপাতালে যোগদান করে এখনো বহাল-তবিয়তে আছেন। তিনি একসঙ্গে পরিসংখ্যানবিদ, হিসাব-রক্ষক ও ক্যাশিয়ারের বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতালের আশপাশ পরিষ্কার করার নাম দিয়ে নামে-বেনামে মাস্টার রোলে কর্মচারী নিয়োগ দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ও ১লা জুলাই ২০১৮ থেকে ৩০শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ লাখ টাকাসহ মোট ১১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি যাদের নামে টাকা উঠানো হয়েছে তাদের কাউকে উপস্থিত করতে পারেনি। এছাড়া হাসপাতালে ১২ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও ট্রেনিং ও অনুপস্থিতি ছাড়া গতকাল দুজন ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন।
এতে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নির্মাণধীন নতুন ভবনে ২০১৮-১৯ সালে হাসপাতাল এলাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হলেও হাসপাতাল এলাকার সব গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। এতে হাসপাতাল এলাকার চরম পরিবেশ বিপর্যয় হয়ে পড়েছে। এ বিষয়েও দুদক কর্মকর্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন অনিয়ম সম্পর্কে বলেন, ‘হাসপাতালের জেনারেটর বিগত ১০ বছর যাবৎ নষ্ট থাকলেও ২০১৬ সাল পর্যন্ত সচল দেখিয়ে তৈল ক্রয় বাবদ অনেক টাকা লুটপাট করা হয়েছে।
২০১৬ সাল থেকে কোনো ধরনের লগ বুক তৈরি না করে প্রতি বছর ২০ হাজার টাকা করে খরচ দেখিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের কর্মচারীদের ডর-মেটরিতে বাড়ি ভাড়া কম দিতে এমএলএসএস এর নামে বরাদ্দ দেখিয়ে আমির হামজা ও স্টাফ নার্স লাকি ঘোষ সরকারি বাসা ব্যবহার করছেন।’ দুদকের অভিযোগ সেন্টার ১০৬ নম্বরে এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়মের সব কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। এসব কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।