× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এফ আর টাওয়ার তদন্ত প্রতিবেদন /দোষী ৬৭ জন ১৮ থেকে ২৩ তলা অবৈধ

প্রথম পাতা

বিশেষ প্রতিনিধি
২৩ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার

অগ্নি দুর্ঘটনায় পড়া বনানীর আলোচিত এফ আর টাওয়ারের নকশা অনুমোদন এবং নির্মাণ কাজে ত্রুটি ছিল। ত্রুটির জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)- এর ৬৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সরকার। তালিকায় রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেমসহ অনেকেই আছেন। গতকাল সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি 
গঠন করা হয়। রাজউকও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে। আমাদের রেওয়াজ আছে তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। আমি অঙ্গীকার করেছিলাম সেই সনাতনী ধারণার বাইরে বেরিয়ে আসব।
তিনি বলেন, আমাদের টার্গেট ছিল এই ভবনটি নির্মাণ পদ্ধতির মধ্যে কোনো অনিয়ম বা ব্যত্যয় ছিল কি-না। হয়ে থাকলে তা কোন ধরনের।

এফ আর টাওয়ারের ১৫তলা পর্যন্ত অনুমোদন নেয়া হয়। এই অনুমোদন যথাযথ ছিল। রেজাউল করিম বলেন, এরপর ১৮তলা পর্যন্ত নির্মাণ প্রক্রিয়া যথাযথ ছিল, কিন্তু যে উপায়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে সেটা সঙ্গত ছিল না। অনুমোদন দেয়ার সময় যে আইন ছিল সেই আইনের আওতায় অনুমোদন দেয়া হয়নি, অনুমোদন দেয়া হয় আগের আইনে। এফ আর টাওয়ারের ১৮তলা থেকে ২৩তলা পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবৈধ বলেও উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি। এদিকে তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, এফ আর টাওয়ারের ১৮ তলার নকশা অনুমোদন করা হয়েছিল বিধি লঙ্ঘন করে। তার ওপরে আরও পাঁচটি ফ্লোর নির্মাণের নকশাকে বৈধতা দিতে বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি হয়। ক্রুটি ও নিয়মের ব্যত্যয় ছিল ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রেও। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রূপায়ন হাউজিং লিমিটেড ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি ওই জমির মালিক সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক এবং এফ আর টাওয়ার ওনার্স সোসাইটিও অগ্নি দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারে না বলে কমিটি মনে করছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, যাদের নাম এ প্রতিবেদনে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে গত ২৮শে মার্চ এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২৭ জন নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। অগ্নিকান্ডের পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থা চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তার একটি গঠন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ১৯৯০ সালে এফ আর টাওয়ারের মাল্টি পারপাস কমার্শিয়াল ১৫ তলা ভবনের নকশা অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং অনুমোদন যথাযথ ছিল।

কিন্তু ১৯৯৬ সালে ওই ভবনের ১৮ তলা আবাসিক কাম বাণিজ্যিক ভবনের নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে ইমারত বিধিমালা মানা হয়নি। গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ইমারত বিধিমালা জারি হওয়ার পরও এফ আর টাওয়ারের নকশা অনুমোদন করা হয় ১৯৮৪ সালের পুরনো বিধিমালার আলোকে। এক্ষেত্রে রাজউকের তৎকালীন চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদেম তার দায় এড়াতে পারেন না। এই বিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হুমায়ুন খাদেম ছাড়াও রাজউকের সাবেক সদস্য ডি এম ব্যাপারী, রাজউকের সাবেক নগর পরিকল্পনাবিদ জাকির হোসেন, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান, সাবেক অথরাইজড অফিসার-২ সৈয়দ মকবুল আহমেদ, সাবেক সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ উল্লাহ এবং জমির মূল মালিক এস এম এইচ আই ফারুককে দায়ী করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর