একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নজরুলসংগীতশিল্পী, গবেষক ও স্বরলিপিকার খালিদ হোসেন চলে গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সংগীতাঙ্গনে। এই বিশিষ্ট শিল্পীকে নিয়ে শোক প্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করছেন তার সহকর্মীরা-
ফাতেমা তুয জোহরা: মৃত্যু যেন দাঁড়িয়ে আছে আমাদের চারপাশে। একের পর এক গুণী মানুষদের আমরা হারাচ্ছি। এই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলেন আমাদের আরো একজন গুণী শিল্পী। আমরা শুধু একজন নজরুলসঙ্গীতশিল্পী, গবেষক ও স্বরলিপিকারকেই হারাইনি। এর সঙ্গে হারালাম আমাদের অভিভাবক। নজরুল সংগীতের এই কিংবদন্তি আজীবন তার কর্মের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
ফেরদৌস আরা: আমাদের দেশে যারা নজরুল সংগীতকে জনপ্রিয় করে তুলেছেন তাদের মধ্যে খালিদ হোসেনের অবদান অনেক বেশি।
তার কণ্ঠে জাদু আছে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সবাই তার কণ্ঠে গান শুনতো। আমাদের চলে যাওয়াদের তালিকায় অবশেষে তিনিও নাম লিখালেন। মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সত্যকে অস্বীকার করার কিছু নেই। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করি। তিনি নিশ্চয়ই ভালো থাকবেন।
সুজিত মোস্তফা: বাংলাদেশে নজরুল সংগীতের আন্দোলন অর্থাৎ এটিকে জনপ্রিয় করার জন্য খালিদ হোসেনের ত্যাগ অনেক বেশি। তার হাত ধরেই আমাদের দেশে নজরুল সংগীত জনপ্রিয়তায় একধাপ এগিয়ে যায়। তিনি নজরুল সংগীতের বাইরে ইসলামি সংগীত ও আধুনিক গানও করতেন। তিনি শিল্পী ছাড়াও ছিলেন একজন শিক্ষক। ফলে তার অনেক ছাত্রছাত্রী আছেন। যারা তার কাছে নজরুলের তালিম নিয়েছেন। তার চলে যাওয়া আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।
কনকচাঁপা: বেদনা ভারাক্রান্ত হয়ে গেলাম। এতো তাড়াতাড়ি আমরা একের পর এক কেবল গুণীদের হারাচ্ছি। সহ্য করা আসলেই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। একদম কলকাকলির শিল্পী হওয়া কাল থেকে অর্থাৎ ৭৬ সাল থেকে ওনাকে চিনি। শিশুশিল্পী হিসেবেই অনেক আদর-স্নেহ পেয়েছি। খুব ভদ্র ধার্মিক স্বল্পভাষী সুভাষী ধোপদুরস্ত মানুষ ছিলেন। শেষ ওনাকে চ্যানেল আই-এ দেখেছি। সেই একইরকম ভদ্রতা! এমন মানুষই আসলে শিল্পী।
খায়রুল আনাম শাকিল: খালিদ হোসেনের মৃত্যুতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা একজন গুণী মানুষকে হারালাম। যার অভাব কোনো দিন পূরণ হবার নয়। কিন্তু মৃত্যুর সঙ্গে কারো সন্ধি হয় না। আমি বিশ্বাস করি এই কিংবদন্তি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন। তিনি অনেক ছাত্রছাত্রী রেখে গেছেন। তারা নিশ্চয়ই এই মানুষের দেখানো পথে হাঁটবেন।