× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাড়া মিলেছে সিমলার

এক্সক্লুসিভ

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
২৪ মে ২০১৯, শুক্রবার

বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ছিনতাই চেষ্টার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রায় তিনমাস চেষ্টার পর চিত্রনায়িকা সিমলার সাড়া মিলেছে বলে জানিয়েছেন সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া। তিনি বলেন, তিন মাস ধরে বিভিন্নভাবে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। বাড়ির ঠিকানায়ও নোটিশ পাঠানো হয়েছে। উনার (সিমলা) মা, ভাই ও বড় বোনের মাধ্যমেও যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এতদিন তিনি (সিমলা) সাড়া দেননি। তবে বুধবার দিনগত রাতে তার বড় বোনের মাধ্যমে সিমলার যোগাযোগের আগ্রহের কথা জেনে টেলিফোন করা হলে ফোন রিসিভ করে আমার সঙ্গে কথা বলেন সিমলা। সিমলা জানিয়েছেন, তিনি এখন শুটিংয়ের কাজে ভারতের মুম্বইয়ে আছেন। ঈদ পর্যন্ত তিনি খুবই ব্যস্ত সময় পার করবেন।
এরপর দেশে ফিরবেন। তখন তিনি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে আসবেন। তদন্তের স্বার্থে যেকোনো তথ্য দিতে তার কোনো আপত্তি নেই বলে জানান তিনি।

রাজেশ বড়ুয়া জানান, গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি বিকালে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট ময়ূরপঙ্খী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার কথা ছিল। ঢাকা থেকে উড্ডয়নের পর পলাশ আহমেদ নামে এক যাত্রী ফ্লাইটটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ঘটনা ঘটান। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের পর সন্ধ্যার দিকে মাত্র ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পলাশ।

এই ঘটনার পরের দিন ২৫শে ফেব্রুয়ারি নগরীর পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার।

সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০১২-এর ৬ ধারা এবং বিমান নিরাপত্তাবিরোধী অপরাধ দমন আইন, ১৯৯৭-এর ১১ (২) ও ১৩ (২) ধারায় পলাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। মামলায় নিহত পলাশ আহমেদ ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। অভিযানে নিহত পলাশ আহমেদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। রাজেশ বড়ুয়া বলেন, তদন্তে নেমে শুরুতেই স্ত্রী সিমলার সঙ্গে বিচ্ছেদের জেরে পলাশ ফ্লাইট ছিনতাই চেষ্টার মতো ঘটনার অবতারণা করেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে পলাশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছাও ব্যক্ত
করেছিলেন। এই সূত্রে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ৩রা মার্চ সিমলার সঙ্গে পলাশের বিয়ে হয় এবং একই বছরের ৬ই নভেম্বর তাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর কয়েক দফা সিমলার অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা করা হয়। তবে বাংলাদেশে তার অবস্থানের কোনো তথ্য না পেয়ে ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলায় বাবার বাড়ির ঠিকানায় তাকে হাজিরের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়।

পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করা হয়। কিন্তু তিন মাসেও সাড়া না পেয়ে সিমলার বড় বোনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার বার্তা দেয়া হয়। একইসঙ্গে দ্বিতীয় দফা নোটিশও পাঠানো হয়। এরপর সিমলার আগ্রহেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। রাজেশ বড়ুয়া জানান, মামলায় বিমানের পাইলট, ফার্স্ট অফিসার, কেবিন ক্রু, বিমানবন্দরের কর্মকর্তাসহ ১৮ জনকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া মার্কেন্টাইল ব্যাংকের একজন সাবেক কর্মকর্তার সন্ধান পাবার চেষ্টা চলছে। সিমলার পাশাপাশি পলাশ আহমেদের আগের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পলাশের বাবা আগামী সপ্তাহে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে আসবেন। এর আগে ২৬শে ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওই ফ্লাইট থেকে উদ্ধার করা পিস্তল ও বিস্ফোরকসদৃশ বস্তুসহ বেশকিছু আলামত জমা দেয় র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো টিম। গত ১৩ই মার্চ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি পিস্তলের ব্যালাস্টিক পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয় কাউন্টার টেরোরিজমের হাতে। এতে বলা হয়, পিস্তলটি ছিল খেলনা।

সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সব সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে মামলার তদন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আসবে। বর্তমানে ভারতের মুম্বইয়ে অবস্থান করা সিমলা দেশে ফেরার পর সিটিটিসির মুখোমুখি হবেন বলেও তদন্তকারী কর্মকর্তাকে আশ্বস্ত করেছেন। সিমলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

তিনি আরো বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণে এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে বা তাদের আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়া হবে। আর কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া না গেলে এবং জড়িত একমাত্র ব্যক্তি মারা যাওয়ায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে মামলা নিষপত্তি করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর