র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পৌরসদর থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৫ হোতাসহ ২১ সদস্যকে আটক করেছে। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুর রহমান প্রত্যেককে ২ বছরের সাজা প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫ জন মূল হোতা ও বাকি ১৭ জন পরীক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল সকালে কলারোয়া থানা সংলগ্ন সোনালী সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ‘কিডস ক্লাব’ কোচিং সেন্টারের ব্লাক বোর্ডে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখে দেয়ার সময় ওই চক্রকে আটক করা হয়। র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ নুর সালেহীন জানান, আমরা জানতে পেরেছি ঢাকায় বসে একটি প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে তাদের কাছে মোবাইল ফোনে প্রশ্ন ও তার উত্তর বলে দেবে। এসব প্রশ্ন ও উত্তর ব্লাকবোর্ডে লিখে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। এজন্য সিন্ডিকেটের হাতে অগ্রিম পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। বাকি টাকা পরীক্ষা শেষে দেয়ার কথা ছিল।
তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটির কাছ থেকে যে প্রশ্নপত্র উদ্ধার করা হয়েছে তার সঙ্গে মূল প্রশ্নে হুবহু মিল পাওয়া গেছে। আটক ৫ হোতা হলো, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা থানার পরানখালি গ্রামের মৃত, আহসান আলীর ছেলে ব্যবসায়ী আবদুল হালিম, সাতক্ষীরার কলারোয়ার ঝাপাঘাটা গ্রমের আবদুল আজিজের ছেলে কিডস ক্লাব কোচিং সেন্টারের পরিচালক জনতা ব্যাংক সেনেরগাতি (পাটকেলঘাটা) শাখার ম্যানেজার আফতাব আহম্মেদ, কলারোয়া উপজেলার ঝাপাঘাটা গ্রামের আবদুল আলিমের ছেলে শিক্ষক আমিরুল ইসলাম, আশাশুনি উপজেলার চেউটিয়া গ্রামের আবদুল ওহাবের ছেলে কৃষি ব্যাংক ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম, আশাশুনি উপজেলার কাকবাশিয়া গ্রামের রইছ উদ্দীনের ছেলে শিক্ষক তরিকুল ইসলাম।
লক্ষ্মীপুরে আটক ১লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে মো. সোলায়মান নামে একজনকে আটক করছে পুলিশ। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সোলায়মানের কাছে থাকা ব্যবহৃত মোবাইলে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পাওয়ায় লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজ কেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক সোলায়মান সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জের আবদুল করিমের ছেলে। তবে আটক সোলায়মান প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা স্বীকার করে বলেন, ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র মোবাইলে পাঠিয়েছে জাহিদ নামে তার এক সহযোগী। এর বেশি কিছু বলতে রাজি নয় সে। অপরদিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও তিনি জানান, মোবাইলে প্রশ্নপত্রের আলামত পাওয়া সোলায়মান নামে এক পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। কীভাবে তার ব্যবহত মোবাইলে প্রশ্ন এলো, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নকল সরবরাহের অভিযোগে এএসআইর কারাদণ্ডপটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নকল সরবরাহের অভিযোগে সদর সার্কেল অফিসের পুলিশের উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মাহবুবুর রহমানকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বেলা ১২টায় পটুয়াখালী রশিদ কিশলয় বিদ্যায়তন পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট উম্মে হাবিবা এ রায় প্রদান করেন। পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুল হাফিজ জানান, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব না থাকা সত্ত্বেও পুলিশের পোশাক পরে বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) পরীক্ষার সংশোধন করা উত্তর সরবরাহ করছিল। এ সময় কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্ব্বেও তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কথা অমান্য করেন। এ সময় অন্য পুলিশের উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে উত্তর পত্রের সংশোধন করা কাগজ উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত পুলিশের উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মাহবুবুর রহমান পটুয়াখালী সদর সার্কেল অফিসে কর্মরত ছিলেন।