× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভূমধ্যসাগর ট্র্যাজেডি ফিরলেন আরো তিনজন /মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলাম

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ মে ২০১৯, শনিবার

তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আরো তিন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এরা হলেন, মাহফুজ আহম্মেদ, বিল্লাল আহম্মেদ ও বাহাদুর। গতকাল ভোরে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। গত ৯ই মে ভূমধ্যসাগরে ইউরোপগামী একটি নৌকাডুবির ঘটনার পর এ নিয়ে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে মোট   ১৮ জনকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)। সংস্থাটির বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিউনিকেশন অফিসার চৌধুরী আসিফ মহিউদ্দিন হারুন জানান
, গত ১১ই মে তিউনিসিয়া উপকূলে ভাসতে থাকা দুটি নৌকা থেকে অন্তত ২৯ জন বাংলাদেশিকে স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার করে। পরে দেশটির কোস্টগার্ডের সহায়তায় তাদের তিউনিসিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ১৮জন বাংলাদেশিকে আইওএমের সহায়তায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। বাকিরা কেউ ফিরতে আগ্রহী হলে তাদেরও ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ই মে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে অন্তত ৪০ বাংলাদেশি নিখোঁজ হন। এদের মধ্যে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ৪০ জনের সবাই পানিতে ডুবে মারা গেছেন। আলাদা তিনটি নৌকায় করে ১৩০ বাংলাদেশি ইতালি যাত্রা করেছিলেন লিবিয়ার ত্রিপোলি উপকূল থেকে। এর মধ্যে একটি নৌকা ইতালি উপকূলে পৌঁছতে পারলেও আরেকটি ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায়।   

মৃত্যুর দুয়ার থেকে বেঁচে ফিরেছি: তিউনিসিয়া থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের একজন গাইন বিজয়। গত ২০শে মে ভোর ছয়টায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন তিনি। গতকাল তিনি জানান, প্রায় দেড় বছর আগে জীবিকার তাগিদে ঢাকা থেকে লিবিয়ায় যান বিজয়। প্রথমে বাংলাদেশ থেকে বিমানে দুবাই পৌঁছান তারা কয়েকজন। দুবাই থেকে মিশরের কায়রো হয়ে যান তিউনিসিয়ায়। সেখান থেকে পৌঁছান লিবিয়ায়। সেখানকার একটি জার্মানি গাড়ির কোম্পানিতে কাজ করছিলেন বিজয়। প্রায় দেড় বছর ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পরও আর্থিক উন্নতি না হওয়ায় অবৈধ পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার মনস্থির করেন। বেশি টাকা আয়ের আশায় লিবিয়ার একটি দালালচক্রের সহায়তায় লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেন। এজন্য দালালদের কয়েক লাখ টাকা দিতে হয় তাকে। লিবিয়ার জোয়ারা থেকে গত ৯ই মে মাছ ধরার ট্রলারে করে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১০ই মে তিউনিসিয়া উপকূলের কাছাকাছি এলাকায় গেলে জ্বালানি শেষ হয়ে যায় ট্রলারের।

বিজয় জানান, জ্বালানি শেষ হলেও আমাদের ট্রলারে কোন সমস্যা হয়নি। এভাবে প্রায় দুই দিন ভাসতে থাকি আমরা। ওই ট্রলারে বাংলাদেশি ও সোমালিয়ান মিলিয়ে প্রায় ৬০ জনের মতো ছিল। ভূমধ্যসাগরে ভাসতে ভাসতে ১১ই মে তিউনিসিয়ার উপকূলে গেলে ওইখানকার জেলেরা আমাদের উদ্ধার করে। পরে তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড উদ্ধার হওয়া সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল থেকে রিলিজ হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় দশ দিন  তিউনিসিয়ায় থাকতে হয় আমাদের। সবশেষ তিউনিসিয়া থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় আসেন বিজয়। গতকাল মুঠোফোনে গাজীপুর থেকে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয়ে আরো উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ জানান। বিজয় বলেন, আমরা ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুর দুয়ার থেকে বেঁচে ফিরেছি। অনেকের হয়তো এই সৌভাগ্যটুকুও হয়নি। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া।  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর