কংগ্রেসে সভাপতি হিসেবে রাহুল গান্ধীর ইস্তফা দেবার সিদ্ধান্তকে ঘিরে সংকট এখনও কাটার লক্ষণ নেই। রাহুলের অভিমান কাটাতে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা দফায় দফায় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতে লাভ হয় নি। বরং, রাহুল দলের নেতাদের জানিয়েছেন সভাপতি হিসেবে বিকল্প নেতা খোঁজা হোক। এখন তিনি বলছেন, কোনও দলিত বা তফশিলি কাউকে এই পদে বসানো হোক। পিছিয়ে থাকা শ্রেণী থেকে উঠে আসা কোনো নেতাই কংগ্রেসের এই বেহাল অবস্থা সামলাতে পারবেন বলে মত তার। বুধবার দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বর্ষীয়ান নেত্রী শীলা দীক্ষিত রাহুলের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে কিছু না বললেও বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, রাহুলের ইস্তফা আটকাতে তিনি দলবল নিয়ে তার বাড়ির সামনে ধরণায় বসবেন। শীলা দীক্ষিত মনে করেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাহুলই পারেন দলকে ঘুরে দাঁড় করাতে।
অতীতেও কংগ্রেস এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল।
কিন্তু প্রতিবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ১৯৭৭ সালের ঘটনা উল্লেখ করে শীলা দীক্ষিত বলেন, সেবার লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের চরম বিপর্যয় হয়েছিল। কিন্তু আড়াই বছরের মাথায় ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারপর বহু বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় থেকেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, ইস্তফার প্রশ্নে এখনও অনড় রয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি চান লোকসভা নির্বাচনের যাবতীয় ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে সরে যেতে। তার এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন দলের শীর্ষ নেতারা। শুধু দলীয় নেতারাই নন, কংগ্রেসের শরিক দল, আরজেডির লালুপ্রসাদ যাদব, ডিএমকের এমকে স্ট্যালিন ও জেডিএসের এইচ ডি কুমারাস্বামী পর্যন্ত রাহুলকে ইস্তফা দিতে নিষেধ করছেন। ইতিমধ্যেই ওয়ার্কি কমিটির বৈঠকে কংগ্রেসের নেতারা যদিও সর্বসম্মতিক্রমে রাহুলের ইস্তফার প্রস্তাব খারিজ করে দলকে আরও বিস্তৃত ও শক্তিশালী করতে রাহুলকেই সর্বময় ক্ষমতা দিয়েছেন।
এদিকে, রাহুলকে আটকাতে মরিয়া দলের নেতাদের একাংশ তাই এবার ধরণায় বসতে চলেছেন। রাহুল যদি সিদ্ধান্ত বদল না করেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি তার বাড়ির সামনে দলবল নিয়ে ধরণায় বসে পড়বেন শীলা দীক্ষিত৷
দলের ভরাডুবির পর নেতাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন রাহুল। যা বলার সবাই প্রিয়াঙ্কাকে জানাচ্ছেন। আসলে রাহুল দলের প্রবীণ নেতাদের একাংশের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ মিটিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোল হবে কিনা, সেদিকে আপাতত তাকিয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সমর্থকরা৷