× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খেলা দেখতে ফেরিওয়ালা

ইংল্যান্ড থেকে

ইশতিয়াক পারভেজ, ইংল্যান্ড থেকে
৩০ মে ২০১৯, বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশের পতাকা ৫ পাউন্ড! ইন্ডিয়ান ফ্ল্যাগ ৫ পাউন্ড! ফ্ল্যাগ... ফ্ল্যাগ...ক্যাপ ২ পাউন্ড.....কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন ভেন্যুর সামনে আসতেই এমন চিৎকারে চমকে উঠতে হলো। রীতিমতো দুই দেশের পতাকা বিক্রি হচ্ছে ফেরি করে। সাধারণত আমরা দেশের স্টেডিয়ামের সামনেই এমন দৃশ্য দেখতে পাই। কার্ডিফে তা বিক্রি করছেন ইংলিশরা। অবশ্য তাদের মধ্যে দুই একজন ভারতীয়ও দেখা মিললো। কিছু দূর এগিয়ে যেতেই নজর কাড়লো এই বিদেশি ফেরিওয়ালাদের ভিড়ে আছেন একজন বাংলাদেশিও। ‘পতাকা নেন পতাকা, ফ্ল্যাগ লাগবোনি ফ্ল্যাগ বলে চিৎকার করছেন। এগিয়ে বাংলাদেশি সংবাদিক পরিচয় দিতেই ভীষণ খুশি তিনি।
সিলেটের হোসেন বিনামূল্যেই হাতে তুলে দিতে চাইলেন টাইগারদের একটি লাল-সবুজের পতাকা।
সেই সঙ্গে জানালেন বার্মিংহাম থেকে তিনি কার্ডিফ এসেছেন খেলা দেখতে। তবে খেলা না দেখে কেন পতাকা বিক্রি করছেন তিনি! তখনই জানা গেল টাইগার ক্রিকেট ভক্তের আসল পাগলামী। দুটি প্রস্তুতি খেলাসহ বাংলাদেশের ১১টি ম্যাচের টিকিট কিনেছেন তিনি। যার জন্য তাকে খরচ করতে হয়েছে অনেক অনেক পাউন্ড। নিজের দুই মাসের খরচই শেষ করে দিয়েছেন শুধু টিকিট কেনার জন্য। তাই বেছে নিয়েছেন ফেরিওয়ালা হয়ে টাকা তুলে নেয়ার পন্থা। অন্তত খরচের টাকা উঠে এলে প্রতিটি ভেন্যুতেই পৌঁছে যাবেন মাশরাফি বিন মুর্তজার দলকে সমর্থন দিতে। হোসেন বলেন, ‘দারুণ ভালো লাগছে এখানে আসতে পেরে। আসলে আমি খেলা দেখতে এসেছি। সেই সঙ্গে ভাবলাম যদি জার্সি, পতাকা এইগুলো বিক্রি করতে পারি তাহলে কিছু খরচও উঠে আসবে। আসলে আমি ১১টি ম্যাচেরই টিকিট কিনেছি। আমার দুই মাসের আয়ের সবটাই খরচ করে ফেলেছি। যে কারণে পকেট খরচ চালাতেই ভাবলাম ফেরি করে দেশের কিছু পতাকা বিক্রি করি। এতে আমারও লাভ আর এখানে যারা টাইগারদের সমর্থন দিতে আসবে তারাও খালি হাতে না গিয়ে পতাকা হাতে সমর্থন জানাবে।’
‘একা নয় বাংলাদেশ’
কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন স্টেডিয়ামের সামনে পৌঁছাতে ৫৪ মিনিট যানজটে অপেক্ষা। দর্শকদের গাড়ির লম্বা লাইন। তাই বাংলাদেশ ও ভারতের দর্শকরা ছুটছেন হাতে পতাকা নিয়ে। বলার অপেক্ষা রাখে না ভারতের সমর্থকই বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ দলও একা নয়। ভারতীয় এক সমর্থককে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশের এক তরুণ। মাথায় অদ্ভুত টুপি, হাতে পতাকা নিয়ে চিৎকার করছিলেন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বলে। কাছে আসতেই জানালেন কার্ডিফ কেন গোটা ইংল্যান্ডেই বাংলাদেশ দলকে একা হতে দিবেন না তারা। তিনি বলেন, ‘মাঠে থাকবে ১১ জন গ্যালারিতে কয়েক হাজার আর ১৮ কোটি মানুষের দোয়াতে জিতবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ একা নয় আমরা আছি সবগুলো ভেন্যুতেই যাবো দলকে সমর্থন দিতে। জিতবে বাংলাদেশ আমরা এখানে বাংলাদেশের জয় দেখতেই এসেছি।’
এছাড়াও ওয়েলসের কার্ডিফ, নিউপোর্টসহ ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহর থেকে এসেছেন অসংখ্য টাইগার সমর্থক। নিজেরা দেশে যেতে না পারলেও দেশকে কাছে পেয়ে তারা ভীষণ আপ্লুত। তিন মেয়েকে নিয়ে আলমগীর আলম ও আফসানা আলম এসেছেন সোফিয়া গার্ডেনে। রাস্তা থেকেই কিনে নিলেন পতাকা ও টুপি। গোটা পরিবার নিয়ে মাঠে আসার কারণ জানিয়ে এই সমর্থক বলেন, ‘আমরা এসেছি বাংলাদেশের জয় দেখতে। আর হার জিততো খেলাতে আছেই। যাই হোক আমরা বাংলাদেশ দলের পাশে আছি। আমরা অন্যান্য ম্যাচের টিকিটও কিনেছি। সব জায়গাতে খেলা দেখতে যাবো ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই বাংলাদেশ দল ফাইনাল খেলুক।’ আফসানা আলম বলেন, ‘আমাদের অনেক প্রিয় ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আমাদের মেয়েরাও তার অনেক ভক্ত। আমাদের দল জিতুক ও মাহমুদুল্লাহ ভালো করুক।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়াতে অনেক সমর্থকই হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। তবে ভারতের বিপক্ষে মেঘ-সূর্যের লুকোচুরি থাকলেও তারা হতাশ নন। তাদের বিশ্বাস ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দেখেই ঘরে ফিরতে পারবেন নিজের দেশকে সমর্থন দিয়ে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর