× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

উফ! লন্ডনেও এমন যানজট!

ইংল্যান্ড থেকে

স্পোর্টস রিপোর্টার, লন্ডন থেকে
১ জুন ২০১৯, শনিবার

লন্ডনের প্রাণ কেন্দ্রেই  ছোট্ট একটি স্টেশনের নাম স্যাডওয়েল। এলাকাটি কমার্শিয়াল রোড নামে পরিচিত। নির্ঘাত আপনি এখানে হাঁটার সময় ভুল করে বাংলাদেশের কোন একটি মহল্লাই ভেবে বসতে পারেন। যাই হোক আরেক দিন শোনাবো সেই এলাকার গল্প। আজ অন্য একটি বিষয়ে জানাই । ঢাকার যে বিষয়টা আমাদের নিত্যদিনের বিরক্তির কারণ তা হলো রাস্তায় যানজট। প্রতিদিনই আমাদের কর্মঘণ্টাগুলো জীবন থেকে ছিনিয়ে নেয় এই যানজট। বাসে, গাড়িতে সব জায়গাতে চলার পথে প্রায় আমরা আক্ষেপ করি।  কেউ মনে মনে কেউবা উচ্চকণ্ঠে সমালোচনা করে থাকি- কেন আমরা জাপান, কানাডা, ইংল্যান্ডের মতো নয়! হ্যা, কেউ কেউ উন্নত বিশ্বের সঙ্গেও তুলনা করে সরকারকে তুলুধুনো করে ফেলি।
কিন্তু পৃথিবীর অন্যতম দামি ও উন্নত শহর লন্ডনে এসে আপনি হয়তো সেই আক্ষেপ আর করবেন না! এখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটি রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে।  গত দুই দিনের কথাই বলি। কার্ডিফ থেকে প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে লন্ডন ফিরছিলাম। ১৫২ মাইল পথের দুই ধারে অপরূপ সৌন্দর্য্য  দেখতে দেখতে আপনার সময়ের কোনো খেয়ালই থাকবে না। কোথাও একবারও গাড়ি থামবে না কোনো কারণ ছাড়া। ভাবছিলাম ও পাশে থাকা এক সহকর্মীকে বলছিলাম যদি আমাদের হাইওয়ে এমন হতো! তবে তিনি বললেন লন্ডন গেলে ভুলটা ভাঙবে তোমার। আসলে ভুলটা ভাঙতে শুরু করলো লন্ডনে প্রবেশ করার আগেই। মাত্র ২০ মিনিটের পথ আমার  গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগলো প্রায় ৩ ঘণ্টা! বলতে বাধ্য হলাম ‘উফ, লন্ডনেও এমন জ্যাম!’
এরপরও আশায় ছিলাম হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক শহরের একটিতে এমনটা প্রতিদিনই হবে না। কিন্তু সেই ভুলও ভাঙলো। বিশ্বকাপ কভার করতে এসে আধুনিক পাতাল মেট্রো ট্রেনের এই সফরে দুই একটা দিন চলাচল ভীষণ কঠিন। ট্রেনে চড়তে হলে আপনাকে টিকিটি কিনতেও পড়তে হবে নানা ঝামেলায়। না জানলেতো কথাই নেই। ভুল হলেই ট্রেন চড়ে আপনাকে গুনতে হবে মোটা অংকের জরিমানা। বাসেও একই অবস্থা। ঢাকার রাস্তায় দাঁড়ালে যেমন হাত দেখালে বাস থামে তা কিন্তু এখানে নেই। হয় অনলাইনে নয়তো আগাম টিকিট কিনতে হবে আপনাকে। লন্ডনের মধ্যে বাস ও ট্রেনে চড়তে আপনাকে ওয়েস্টার কার্ড কিনতে হবে। এই কার্ডটি অনেকটা এটিএম কার্ডের মতো। সেখানে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে টাকা ভরে নিয়ে চলাফেরা করতে পারবেন। তাই প্রথম দুই একদিনের এই জটিল প্রক্রিয়াগুলো আপনার বুঝতে সমস্যাই হবে।  তাই নিরাপদ হলো ট্যাক্সি নেয়া। কিন্তু সেখানে গুনতে হবে বেশি পরিমানে পাউন্ড ও সেই সঙ্গে লন্ডন শহরের তীব্র যানজট।
গতকাল স্যাডওয়েল থেকে যাত্রা শুরু করেছিলাম ওভালের দিকে। সেখানে কেনিংটন ওভাল স্টেডিয়ামে টাইগাররা ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে। সকাল ১০টায় অনুশীলন তাই যানজটের ভয়ে এক ঘণ্টা আগেই বের হয়ে যেতে হলো। এরপর শুরু বিড়ম্বনার। ট্রেনে যেতে হলেও মাটির উপর ও পাতালে তিনটি লাইন বদলাতে হবে। এরপর ওভাল। তাই ট্যাক্সিই ভরসা। কিন্তু সকালের তীব্র যানজনের কারণে ড্রাইভাররা কোনো ভাবেই নির্ধারিত ভাড়াতে যেতে রাজি নয়। হয় মিটারে যাও নাইলে বাদ দাও। তবে আগেইতো বলেছি যে স্যাডওয়েলের কামার্শিয়াল রোড বাংলাদেশের মানুষ হলে বিপদ একটু কম। কারণ এখানে বেশির ভাগ ট্যাক্সি ড্রাইভারই বাংলাদেশি। অবশেষে নিজেদের দেশের সংবাদিক পরিচয় পেয়ে সিলেটের মাসুম ভাই রাজি হয়ে গেলেন। বললেন,  ‘দেশের মানুষের জন্য সব করমু বাই, ওডেন ওডেন।  ট্রেনে গেলেই আপনে বালা অইতো, জ্যামে পরমুনে সামনে।’ তার ভয়টাই সত্যি হলো। একের পর এক মোড়ে তীব্র যানজট পেড়িয়ে  অবশেষে ওভাল আসতেই দেখি বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরু হয়ে গেছে। গাড়ি চালক মাসুম ভাই ফের যাওয়ার আগে লন্ডনে আমাদের ট্রেনে চড়ার বার বার পরামর্শ দিয়ে গেলেন। সেই সঙ্গে জানালেন এতে করে যানজট এড়ানো যাবে বাঁচবে টাকাও। তবে সাবধানও করলেন, ভুল করলেই কিন্তু ৮০ পাউন্ড জরিমানা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার টাকা!
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর