× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নজিরবিহীন অবস্থান, ইতিহাসের কাঠগড়ায় ছাত্রলীগ

মত-মতান্তর

শামীমুল হক
৮ জুন ২০১৯, শনিবার
ছবি- জীবন আহমেদ

প্রতিবাদ। তীব্র প্রতিবাদ। স্বচ্ছতার দাবিতে প্রতিবাদ। সুন্দরের দাবিতে প্রতিবাদ। দাবি আদায়ের প্রতিবাদ। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতিবাদ চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে। ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিচিত মুখগুলো এখনো রাতদিন সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো ঈদ।
সেই ঈদের দিনও ওরা অবস্থান থেকে নড়েনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পরই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে গোটা ছাত্রলীগ পরিবার। পদ পাওয়া কমপক্ষে একশ’ নেতাও এ কমিটির বিরুদ্ধে স্লোগান তোলে। আর ত্যাগী নেতা-কর্মী তো রয়েছেনই। যারা পদবঞ্চিত হয়েছেন কোনো কোনো নেতার প্রতিহিংসার কবলে পড়ে। শুধু তাই নয়, পদ পাওয়ারা একাধিকবার হামলা চালায় পদবঞ্চিতদের উপর। কোনো ছাত্র সংগঠনের কমিটি ঘোষণার পর এমন প্রতিবাদ নজিরবিহীন।

এর যৌক্তিকতাও প্রমাণিত হয়। আন্দোলনের মধ্যেই ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে ১৯ জনের পদ স্থগিতের ঘোষণা দেন। বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে পদবঞ্চিতরা ৯৯ জনের নাম ঘোষণা করেন। যাদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণসহ নানা অভিযোগ আনা হয়। তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ অবস্থায় ঈদের দিনও তারা স্বজনদের ছেড়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। ঈদের দিন অবস্থান ধর্মঘট কিংবা আন্দোলন ইতিহাসে ঠাঁই করে নিলো। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেউ এগিয়ে আসেননি তাদের মুখে সেমাই তুলে দিতে। কিংবা ঈদের আগেই তাদের আশ্বস্ত করে আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে। অবশ্য ঢাবি ভিসি ঈদের দিন আন্দোলনকারীদের জন্য সেমাই নিয়ে হাজির হয়েছিলেন রাজু ভাস্কর্যে।

ভিসি আন্দোলনকারীদের মুখে সেমাই তুলে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসাবে ভিসি প্রশংসনীয় কাজ করেছেন। কিন্তু যারা আন্দোলন করছেন তাদের কথা-বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া ছাত্রলীগকে বিতর্ক মুক্ত রাখতেই তাদের এ আন্দোলন। তারা তাদের নেত্রী, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন। তাদের কথা- আপার মুখের কথা শুনেই আমরা এখান থেকে বিদায় নেবো। অনেক নেতা আমাদের সঙ্গে কথা দিয়ে কথা রাখেননি। আমরা আর কাউকে বিশ্বাস করি না।

প্রশ্ন হলো- ছাত্রলীগে এতো ত্যাগী ও সৎ নেতা থাকতে কেন বিতর্কিতদের নিয়ে কমিটি করতে হবে? এর পেছনে কারণ কি? ১৯ জনকে বিতর্কিত চিহ্নিত করার পরও কেন তাদের নাম বা পদ শূন্য ঘোষণা করা হচ্ছে না? কেন ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হলো? কেনইবা ছাত্রলীগের কমিটি করতে গিয়ে গঠনতন্ত্রকে মূল্যায়ন করা হয়নি? ছাত্রলীগের এমন বিতর্কিত কর্মকা-ই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বর্তমান নেতৃত্বকে। এর জবাব তারা কি দেবেন? পদবঞ্চিতরা তো হিসাব দিয়েছেন সভাপতির নিজ জেলা থেকে ৬ জনকে কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে এমন একজন রয়েছেন যার পিতা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। যেখানে ছাত্রলীগের সভাপতি নিজে সেখানে তার ভাইকে কেন পদ দিতে হবে? এসব প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে। এর উত্তর হয়তো জানা আছে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার কাছে।

শেষ কথা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ই জুন শনিবার বাংলাদেশে ফিরেছেন। তিনিই পারেন এসবের সমাধান দিতে। তার দিকে যেমন তাকিয়ে আন্দোলনকারীরা, তেমনি তাকিয়ে পদ পাওয়ারাও। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে অগোছালো ছাত্রলীগকে সঠিক পথে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেবেন। একই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রলীগকে কলঙ্কমুক্ত করবেন- এটাই সবার আশা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর