নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ঈদের ছুটিতে বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে এসে এক গার্মেন্ট কর্মী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঈদের পরদিন গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল সকালে থানায় অভিযোগ হলে পুলিশ ওই গার্মেন্ট কর্মীকে ফতুল্লার ধর্মগঞ্জ আরাফাতনগর এলাকায় বান্ধবীর বাসায় অভিযান চালিয়ে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। ওই সময় ওই বাসা থেকে দুই ধর্ষকসহ বান্ধবী মৌসুমীকে আটক করেছ পুলিশ। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ধর্ষিতাকে নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষকদের নাম প্রকাশ করেনি।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, অষ্টাদশী ওই গার্মেন্ট কর্মীর বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকায়। ঈদের পরদিন শুক্রবার দুপুরে শামীম নামে তার এক বন্ধু ঢাকা থেকে তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। শামীমকে সঙ্গে নিয়ে ওই তরুণী নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রেনে ফতুল্লায় যায়।
সেখানে গিয়ে সে তার পূর্ব পরিচিত মৌসুমীকে ফোন দিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করলে মৌসুমী তার বাসার ঠিকানা তাকে দেয়। মৌসুমী সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলীতে থাকার সময় ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মৌসুমী স্বামী পরিত্ত্যক্তা।
মৌসুমীর আশ্বাসে ওই তরুণী তার বন্ধুকে নিয়ে মৌসুমীর ফতুল্লার আরাফাত নগরের ভাড়া বাসায় যায়। বন্ধুকে নিয়ে ওই তরুণী মৌসুমীর বাসায় যাওয়ার পরেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ওই সময় মৌসুমী ও তার সঙ্গের লোকজন তাদের আটক করে ওই তরুণীর মায়ের কাছে ফোন দিয়ে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মৌসুমী ওই তরুণীর মাকে ফোনে জানায়, তার মেয়ে এক ছেলে বন্ধু নিয়ে তাদের এলাকায় ঘুরতে এলে স্থানীয়রা তাদের আটক করে এই টাকা দাবি করছে। এ খবর পেয়ে ওই তরুণীর মা শুক্রবার রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন।
ওই জিডির সূত্রধরে প্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ মৌসুমী অবস্থান সনাক্ত করে। এরপর ফতুল্লা পুলিশের সহযোগিতায় মৌসুমীকে গ্রেফতারে কৌশলের আশ্রয় নেয় পুলিশ। মৌসুমীকে ফোন করে পরিচয় গোপন করে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় আপনার নামে পার্সেল এসেছে কুরিয়ার সার্ভিসে, এসে নিয়ে যান। তখন মৌসুমী বলেন, আমার বাসায় এসে দিয়ে যান। এ কথা বলে মৌসুমী তার বাসার ঠিকানা দেয়। ঠিকানা মতো পুলিশ রোববার দুপুরে আরাফাতনগর এলাকার বাসায় গিয়ে মৌসুমীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার ঘর থেকে ধর্ষণের শিকার ওই গার্মেন্ট কর্মীকে আহত অবস্থায় বের করে দেয়। তখন মৌসুমীর ঘর থেকে দুই ধর্ষককেও আটক করে পুলিশ।
আটককৃত ধর্ষকরা পুলিশকে জানায়, মৌসুমীই ওই তরুণীকে ধর্মগঞ্জ এলাকার সলিমুল্লাহর ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে তাদের হাতে তুলে দেয়। তারা ৮/৯ জন ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। তখন ওই তরুণীর সঙ্গে থাকা যুবক তাদের বাধা দিলে ওই তরুণীসহ তার বন্ধুকে মারধর করা হয়। ধর্ষণের ফলে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে মৌসুমী ইটভাটা থেকে তাকে তার বাসায় এনে রাখে। পুলিশের অভিযানে ধর্ষিতার বন্ধু শামীমকেও আহতবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।