× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রংপুরে জেলা পরিষদের প্রায় অর্ধকোটি টাকা লুটপাট

শেষের পাতা

জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে
১৯ জুন ২০১৯, বুধবার

রংপুরে জেলা পরিষদের সরকারি প্রায় ৩০০টি গাছ কেটে আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গাছ চুরির সত্যতা পেয়ে জেলা পরিষদে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনের সূত্র দিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, রাস্তা সম্প্রসারণের অজুহাতে জেলা পরিষদের প্রায় ৩০০ গাছ কেটে নিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের কতিপয় সদস্য ও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ব্যাপারে রংপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ছাফিয়া খানম বলেন, সরকারি গাছ যারা কর্তন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার  প্রক্রিয়া চলছে।

এলাকাবাসী ও জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার সাদুল্ল্যাহপুর পীরগঞ্জ-নবাবগঞ্জ জেলা সড়কের ও খালাশপীর পর্যন্ত রাস্তার মূল্যবান গাছ-গাছালি কেটে নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তারাগঞ্জ উপজেলা থেকে বকশিগঞ্জ পর্যন্ত ডিসি রোডের উভয় পার্শ্বে তিন ফুট করে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। রাস্তার দু’ধারে জেলা পরিষদের অনেক ফলজ, বনজ গাছ ছিল। রাস্তার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এর তিন ফুটের মধ্যে যে গাছগুলো ছিল সেগুলো জেলা পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে কাটার কথা।
কিন্তু কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন হীরা তার লোকজন দিয়ে ধলাইঘাট থেকে রামনাথপুর ইউনিয়নের সীমানা পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে তিন ফুটের মধ্যে এবং নির্ধারিত এলাকার বাহিরের আকাশমনি, মেহগনি, ইউকালিপটাস গাছ অবৈধভাবে কাটেন। জেলা পরিষদের দুই সদস্য মোহসিনা বেগম ও মমতাজ উদ্দিন এই গাছ কাটার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী গাছ কাটার বিষয়ে প্রতিরোধ করলে তাদের ভয়-ভীতি দেখায় চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এমন অভিযোগও এনেছে তারা। এলাকাবাসী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহীর বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন।

হাসানুল ইসলাম, সামছুল ইসলাম, আইয়ুব আলী অভিযোগ করে বলেন, গাছ জাতীয় সম্পদ। রাস্তার দু’ধারে ইউপি চেয়ারম্যান সরকারি তাজা গাছ ও অপ্রাপ্ত গাছ কেটেছে। আমরা গাছ কাটার কাগজপত্র দেখতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান তা দেখাতে পারেননি। বরং গাছ কাটায় বাধা দিলে আমাদের উচিত শিক্ষা দেবেন বলে চড়াও হয়ে উঠেন। এতে করে এলাকার পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমরা মনে করি। যখন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতন মহল চিন্তিত। এবং সরকারিভাবে বেশি বেশি গাছ লাগানোর কথা বলা হচ্ছে। তখন এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের উদ্বিগ্ন করে। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।  

এ বিষয়ে রাধানগর ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন হীরা গাছ কাটার সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত নন বলে দাবি করে বলেন, আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হচ্ছে। গাছ জেলা পরিষদের, তারাই জানে গাছ কোথায়। তিনি আরো বলেন, গাছ কাটার শুরুর দিকে জেলা পরিষদের সদস্য মোহসিনা বেগম ও মমতাজ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তারা গাছ কাটার বিষয়টি তদারকি করেছেন এবং কিছু গাছ উপজেলা ডাক বাংলোতে নিয়ে গেছেন।

এদিকে জেলা পরিষদের একটি সূত্র জানায়, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সভা করে অভিযুক্ত দুই সদস্য মহসিনা বেগম ও মমতাজ উদ্দিনকে ডেকে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জোর প্রতিবাদ করেন। সেই সঙ্গে জেলা পরিষদের গাছ কাটার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন কিংবা মামলা করা যেন না হয় এমন কথা জানান। অন্যথায় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুমকি দেন।  

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, জেলা পরিষদের গাছ কেটে হরিলুট করা হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ পাওয়ার পর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সাবেক সচিব মির্জা মুরাদকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। দ্রুতই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর