× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মুরসিকে হত্যার অভিযোগ নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি জাতিসংঘের

এক্সক্লুসিভ

মানবজমিন ডেস্ক
২০ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার

মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুতে দ্রুততার সঙ্গে এবং পূর্ণাঙ্গ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে জাতিসংঘ। তার পরিবার ও মুসলিম ব্রাদারহুডের অভিযোগ, কারাগারে আটক রেখে তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়নি তাকে। এ অবস্থায় মুরসির মৃত্যুকে পরিবার ও মুসলিম ব্রাদারহুড হত্যাকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করেছে। একই দাবি করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। মিশরে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ মুরসি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই এক সামরিক অভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাল আল সিসি।
তারপর তিনি প্রেসিডেন্ট হন।  গ্রেপ্তার করে মুরসিকে পাঠানো হয় জেলে। সেখানে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা চলছিল। দুটি মামলায় তার সাজাও দেয়া হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এ সময় তিনি সেখানে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে মারা যান। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তার হাজার হাজার ভক্ত তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছে। তার মৃত্যুতে স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে মঙ্গলবার। এতে বলা হয়েছে, তাকে প্রায় ৬ বছর কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল। ওই পুরো সময়ে তার যে মেডিকেল চিকিৎসা
 দেয়া হয়েছে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিলে এক বিবৃতিতে বলেছেন, বন্দি অবস্থায় পর্যাপ্ত মেডিকেল সেবা, তার আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ পাওয়ার যে অধিকার ছিল মুরসির সেই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই এর তদন্ত হওয়া উচিত বিচারবিভাগীয় অথবা কর্তৃপক্ষের প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ কোনো কর্তৃপক্ষ দিয়ে, যারা দ্রুত, পক্ষপাতিত্বহীন ও কার্যকর তদন্ত সম্পন্ন করতে পারে, মুরসির মৃত্যুর কার্যকর তদন্ত করতে পারে এবং মৃত্যুর কারণ নির্ধারণ করতে পারে।
 মোহাম্মদ মুরসির ছেলেরা বলেছেন, রাজধানী কায়রোতে আদালতে ভয়াবহ হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত হন মুরসি। পরের দিন মঙ্গলবার তাকে পারিবারিকভাবে ছোটখাটো আয়োজনে দাফন করা হয়েছে। ওদিকে মুরসির মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী তাওয়াক্কল কারমান বলেছেন, আমি নিজের জন্য এবং বিশ্বের সব মুক্ত মানুষের মুক্তপথের পক্ষের একজন মহান ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। দোহা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক জামাল এলশায়াল রিপোর্টে বলেছেন, সাবেক এই প্রেসিডেন্টের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, শোক প্রকাশ করতে স্থানীয় একটি মসজিদে যোগ দিয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।  সেখানে উপস্থিত ছিলেন ফিলিস্তিনের যোদ্ধা গোষ্ঠী হামাসের সাবেক নেতা খালেদ মিশাল। এতে মনে হয়, ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রাম সহ অন্যান্য ইস্যুতে মুরসি একজন চ্যাম্পিয়ন। মুরসির প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রার্থনা জানাতে ইস্তাম্বুলে এক দোয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।
সেখানে ফাতিহ মসজিদে কয়েক হাজার মুসল্লি যোগ দেন। তাদের উদ্দেশে এরদোগান বলেন, মুরসি একজন শহীদ। তার মৃত্যুর জন্য তিনি মিশরের স্বৈরাচারদের দায়ী করেন। তিনি বিশ্বাস করেন না যে, মুরসি মারা গেছেন কোনো স্বাভাবিক কারণে। বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলেন, আমি বিশ্বাস করি না এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। তাকে নীরবে, নিভৃতে দাফন করার জন্য মিশর কর্তৃপক্ষের নিন্দা জানান। ওই দাফন অনুষ্ঠানে শুধু পরিবারের কিছু সদস্যকে উপস্থিত থাকতে দেয়া হয়েছে। কায়রোতে দাফন করার সময় কবরস্থানের কাছেও যেতে দেয়া হয় নি সাংবাদিকদের। কিন্তু এখনো তার ভক্তরা তার নিজের প্রদেশ শারকিয়াতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। মিশরের নির্বাসিত বিরোধীদলীয় রাজনীতিক আয়মান নূর মুরসিকে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নির্বাসনে বসবাস করছেন মুসলিম ব্রাদারহুড়ের সিনিয়র সদস্য আমর দারাগ। তিনি বলেন, মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি একজন খুনি। অবশ্যই এ খুনের জন্য স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত হতে হবে। মুরসির মৃত্যুতে বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর