× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২ স্কুলছাত্রীসহ ৫ কিশোরী ধর্ষিত

দেশ বিদেশ

বাংলারজমিন ডেস্ক
২০ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার

দেশের বিভিন্ন জেলায় ২ স্কুলছাত্রীসহ ৫ কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে সোনারগাঁয়ে বিয়ের প্রলোভনে তরুণী, মাধবপুরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রী, আশুলিয়ায় স্কুলছাত্রী, লক্ষ্মীপুরে প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে। এছাড়া রামগঞ্জে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ভাবিকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে বখাটে দেবর এবং নাগেশ্বরীতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে জরিমানার টাকা আত্মসাৎ করেছে স্থানীয় কথিত সালিশকারী। বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সোনারগাঁয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক যুবতী (২৩)কে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল সকালে ধর্ষিতা বাদী হয়ে ধর্ষক মোফাজ্জল হোসেন (২৬)কে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে ধর্ষিতা উল্লেখ করেন, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হলদাবাড়ি গ্রামের আঃ হাকিম মিয়ার ছেলে মোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে একই স্কুলে লেখাপড়া করতেন দুজন। এ সুবাদে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রেমিকার মা-বাবা তাকে ২০১০ সালে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পর মোফাজ্জল হোসেন প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে তার স্বামীর সংসার ছেড়ে চলে আসতে বলে।
প্রেমিকা তার কথায় ২০১১ সালে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। এরপর মোফাজ্জলকে বিয়ে করতে বললে সে নানা টালবাহানা শুরু করে এবং বিয়ে করবে বলে তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায়  ঘোরার কথা বলে দৈহিক মিলনে বাধ্য করে। এরই মধ্যে মোফাজ্জলের বাবা-মা তাকে অন্যত্র বিয়ে করিয়ে দেন। তখন প্রেমিকা বিয়ের ব্যাপারে মোফাজ্জলের কাছে জানতে চাইলে  সে প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে। গত ১২ই জুন সন্ধ্যায় মোফাজ্জল প্রেমিকার (ধর্ষিতার) বাড়িতে এসে তাকে একা পেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে গণধোলাই দিয়ে ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আত্মসাৎ করেছে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কুটি নাওডাঙ্গা আমিরটারী স্যাল্লাপাড়া গ্রামে। এলাকাবাসী জানায়, ধাউরারকুটি আদর্শবাজার গ্রামের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান (৪৫) তার প্রতিবেশী ভাই আব্দুর রহিমের শ্বশুরবাড়ি কুটি নাওডাঙ্গা গ্রামের জগো’র বাড়িতে যাওয়া-আসা করতো। এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে পরিকল্পিতভাবে স্যাল্লাপাড়া গ্রামের স্থানীয় লোকজন ওই গ্রামের এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানকে গণধোলাই দেয়। পরে গ্রাম্য সালিশ করে ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ টাকার মাত্র ২৭ হাজার টাকা শাহিনুর বেগমকে দিয়ে বাকি ২০ হাজার টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন স্থানীয় কথিত সালিশকারীরা।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, হবিগঞ্জের মাধবপুরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে দুই লম্পট। গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর মা জানান, দশম শ্রেণি ও নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই মেয়ে গত মঙ্গলবার রাতে পড়ার ঘরে ছিল। রাত ১১টার দিকে তার ছোট মেয়ে পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া অপর মেয়ে পড়তে পড়তে টেবিলের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে। এ সময় তাদের পিতা বাড়িতে ছিলেন না। এমন সময় দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে প্রবাসফেরত মোস্তফা কামাল (৪০) ও একই গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে শাহেদ মিয়া (৪৫) ঘরের জানালা ভেঙে কালো পোশাক পরে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বড় মেয়েকে জিম্মি করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। লম্পট দুইজন ধর্ষণ শেষে যাবার সময় হুমকি দেয় ঘটনাটি কাউকে জানালে পরে এসে বাড়ির সবাইকে মেরে ফেলবে। ঘটনার পরদিন বুধবার সকালে ধর্ষণের শিকার পরিবারের লোকজন বঙ্গবীর ওসমানী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের ঘটনাটি অবহিত করেন।  
স্টাফ রিপোর্টার, সাভার থেকে জানান, সাভারের আশুলিয়ায় এক গৃহবধূর সহযোগিতায় ৫ম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে আরেক প্রতিবেশী লম্পট জামশেদ। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তা মীমাংসার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালীদের দিয়ে উল্টো ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শিশুটির মা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করলে গতকাল দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এসময় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় সহায়তাকারী পোশাক শ্রমিক রাবেয়া বেগমকে আটক করা হলেও ধর্ষক জামশেদ পলাতক থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার ধনাইদ এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ভুক্তভোগী ওই শিশুকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। ধর্ষণে সহায়তার ঘটনায় আটক নারী শ্রমিক রাবেয়া বেগম (৩০) গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার নাটেরহাট গ্রামের মো. সিদ্দিকের স্ত্রী। এছাড়া ধর্ষক জামশেদ হোসেন একই জেলার ভাঙাবুনিয়া গ্রামের মো. আব্দুল হান্নানের ছেলে। বর্তমানে তারা দুজনেই আশুলিয়ায় ভাড়া থেকে তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত সোমবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার ধনাইদ এলাকায় প্রতিবেশী নারী রাবেয়া বেগম কাজের কথা বলে ৫ম শ্রেণী পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে কৌশলে আরেক প্রতিবেশী জামশেদের ঘরে রেখে আসে। এসময় জামশেদ ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে এক প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণের মামলায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক রামগঞ্জ উপজেলার মাঠ সহকারী মাসুদ আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এ মামলায় মাসুদ আলমকে আসামি করা হয়। এর আগে রাতে উপজেলার পূর্ব পানপাড়া এলাকা থেকে মাসুদ আলমকে আটক করা হয়। পরে আটককৃত মাসুদ আলমকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। অপরদিকে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ ও প্রতিবন্ধী কিশোরীর স্বজনরা জানায়, কিশোরীর মা ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক রামগঞ্জ উপজেলা শাখা থেকে মাঠ সহকারী মাসুদ আলমের মাধ্যমে ২১ হাজার টাকা ঋণ নেয়। এ ঋণের টাকা নেয়ার জন্য মাসুদ আলম তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। এ সুবাধে ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ইতিমধ্যে প্রতিবন্ধী কিশোরী দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর মাসুদ আলমকে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেয় স্থানীয় এলাকাবাসী। এরপর থেকে মাসুদ আলম গা-ডাকা দেয়।
রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৬নং লামচর ইউনিয়নের পানপাড়া গ্রামে মঙ্গলবার বিকালে বখাটে দেবর মুরাদ হোসেন ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ভাবিকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় ভাবিকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেছে। বখাটে মুরাদের আশ্রয়দাতাদের হুমকি-ধমকিতে ভাবির তিন সন্তান বসতঘরে থাকতে পারছে না।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পানপাড়া গ্রামের সলিম উদ্দিন পণ্ডিত বাড়ির আলী আকবরের বখাটে ছেলে মুরাদ হোসেন মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে তার প্রবাসী ভাই আ. মন্নানের পাকা বসতঘরে যায়। বসতঘরে প্রবেশ করেই ভাবিকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হয়ে প্রতিবাদ করায় বখাটে দেবর ভাবিকে লোহার রড দিয়ে দেহের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। এতে ভাবি অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে গ্রামের লোকজন উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাবি বলেন, ৮ মাস পূর্বে জটিল রোগে আমার দুই অপারেশন হওয়ায় শারীরিকভাবে খুব অসুস্থ। এই সুযোগে মুরাদ আমার উপর নির্মম অত্যাচার চালিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সরজমিন গিয়ে মুরাদ হোসেনকে না পেয়ে তার স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, আমি টিনশেড ঘরে ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে স্বামী মুরাদ ভাসুরের পাকা বসতঘরে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার চেষ্টা করে। লোকজনের চিৎকারে ঘুম ভেঙে গেলে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি বাসুর মন্নানের স্ত্রী অচেতন অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আমির হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়েছি। রামগঞ্জ থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর