× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাজেট নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর চান রুমিন ফারহানা

দেশ বিদেশ

সংসদ রিপোর্টার
২০ জুন ২০১৯, বৃহস্পতিবার

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর জানতে চান বিএনপি দলীয় এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। গতকাল প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন ফরহানা বলেন, দেশে ৪ কোটি মানুষ দরিদ্র, ২ কোটি মানুষ হত দরিদ্র কেন? দেশে ৪ কোটি ৮২ লাখ মানুষ কেন কর্মহীন। কেন যুবকরা ইউরোপে পাড়ি দিতে গিয়ে ভুমধ্যসাগরে ভাসে? কেন কৃষক ধানে আগুন দেয়। এই বাজেটে এর জবাব পাওয়া যাবে? অর্থনীতিবিদরা বলছে বাজেট গতানুগতিক,আমরাও বলছি গতানুগতিক। বাজেটে এবারও ঘাটতি আছে। এই ঘাটতি পুরণে বৈদেশিক ঋণ নিতে হবে। বৈদেশিক ঋণ নিয়ে প্রকল্প করা হয়। কোনো প্রকল্পই অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে না বরং ঋণের চাপ বাড়ব্‌ে।
তিনি বলেন, গত এক দশক ধরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আটকে আছে ২২ শতাংশে। দেশে বেকারত্বের কারণ এই বিনিয়োগ স্থবিরতা। এই মুহুর্তে যে শিশুটি জন্ম নিচ্ছে তার মাথার উপর ঝুলছে ৮০ হাজার টাকার ঋণ। সরকারের আরেকটি বড় ব্যর্থতা হলো আয় কর দেয়া নাগরিকের সংখ্যা না বাড়ানো। বিদেশী কর্মীদের করজালের মধ্যে আনার ব্যবস্থা সরকার করেনি। ২০১০-১১ অর্থ বছরে বাজেট বাস্তবায়নের হার ছিলো ৯২ ভাগ। সেটা ক্রমান্বয়ে কমে ৭৬ ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থ বছর শেষ হওয়ার তিন মাস আগে তড়িঘড়ি কাজ করা হয়। এশিয়ার দ্বিতীয় খারাপ রাস্তার দেশ বাংলাদেশ। ঋণ খেলাপীতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে। ব্যাংকগুলোকে তুলে দেয়া হয়েছে এক একটি পরিবারের হাতে। শিক্ষার মান উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপের কথা নেই বাজেটে। ধানের ন্যায্য মুল্য না পেয়ে কৃষক ধান ছিটিয়ে ফেলে দিয়েছে, আত্মহত্যা করেছে। কৃষকের ধানের দাম পাওয়ার ব্যাপারে বাজেটে কিছু বলা নেই। রুমিন ফারহানা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসা মানেই শেয়ার বাজার ধ্বংস হয়ে যাওয়া। শেয়ার বাজার থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুনীতির একটি বড় খাত বিদ্যুৎ খাত। কথায় কথায় কুইক রেন্টাল করে বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন,বাজেট বাড়ছে, কিন্তু দেশ ও জনগণের উন্নয়ন হচ্ছে না। খেলাপী ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। তিনি আরো বলেন, ব্যাংকের টাকা লুটপাট চলছে। সারাদেশে দুর্নীতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। দুনীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে সরকারী দলের নেতারা টাকার পাহাড় তৈরি করছে। অন্যদিকে, বাজেটে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উপর করারোপ করে সরকার সাধারণ মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। দেশবাসী সরকারের এই গণবিরোধী বাজেট প্রত্যাখ্যান করেছে বলে তিনি দাবি করেন। প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে এই আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, কাজী কেরামত আলী, রুশেমা বেগম, বেগম শামসুন নাহার, এ কে এম ফজলুল হক, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন ও সেলিমা আহমেদ, গাজী শাহনেওয়াজ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জাসদের শিরীন আখতার।
আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গত এক দশকে প্রমাণ করেছে, তারা বড় বাজেট দিতে পারে এবং তা বাস্তবায়নও করতে পারে। আগে দেশের দারিদ্র্যের সংখ্যা ছিল ৪৮ ভাগ, বর্তমান সরকার তা ২১ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। অতিদরিদ্র্যের হারও ৩৩ ভাগ থেকে ১১ ভাগে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এটা একটা বিশাল অর্জন। পদ্মা সেতু, মেট্টোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র, কর্ণফুলী ট্যানেলের মতো বড় বড় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। বাংলাদেশকে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে ২০২১ সাল পর্যন্ত মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, দেশকে ধ্বংস করতে যা যা করার তার সবই করে গেছে বিএনপি-জামায়াত জোট। সবচেয়ে ক্ষতি করেছে রেলবিভাগকে। সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরুজ্জীবিত করেছেন। সারাদেশকে রেলওয়ের নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। রেলওয়ের অনলাইনে টিকিট ক্রয়, রেলের বগিতে কমোড স্থাপনসহ আধুনিক করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল সিঙ্গেল গেজের লাইনগুলোকে ডবল গেজে উন্নীত করার পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে। জাসদের শিরীন আখতার অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন কঠোরহস্তে দমন করতে হবে দাবি করে বলেন, বিএনপির সংসদ সদস্যরা নিজেরা সংসদে যোগ দিয়ে সংসদকে অবৈধ বলে নিজেদেরকে অবৈধ বলছে। জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকতে কখনো নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলেননি। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, অগ্নিসন্ত্রাস, ভয়াল নৃশংসতার কারণে দেশের জনগণ বিএনপিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভূক্তকরণের দাবি জানিয়ে বলেন, যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভুক্তি করা হচ্ছে, সেটা ঠিক করতে রাজনৈতিক  নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর জন্য রাজনৈতিক নেতাদেরকেই জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়। সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিও ভুক্ত করতে হবে। এমপিও ভুক্তির প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এ বিষয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার আছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর