× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিদ্ধিরগঞ্জে জিন তাড়ানোর নামে যুবতীকে হত্যা

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে
২১ জুন ২০১৯, শুক্রবার

সিদ্ধিরগঞ্জে জিন তাড়ানোর নামে কবিরাজ দম্পতির শারীরিক নির্যাতনে মারা গেছে এক যুবতী। নিহতের নাম শাহনাজ আক্তার শিখা (২৫)। সে শ্যামপুর থানার সাদ্দাম মার্কেট এলাকার শাহআলমের মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ কবিরাজ দম্পতি ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রী জেসমিনকে আটক করেছে। পরে নিহতের মা বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি চৌধুরীপাড়ায় বিল্লালের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃত কবিরাজ দম্পতিকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঈদুল ফিতরের ২-৩ দিন পর থেকে শাহনাজ আক্তার শিখা তার মাকে প্রায়ই কোনো কিছু মনে থাকে না বলে জানায়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসার জন্য ১৫ই জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
ওষুধ খাওয়ানোর একদিন পর মানসিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সামনে যাকে পায় তাকেই মারধর করে শাহনাজ। পরে প্রতিবেশীদের পরামর্শে ১৬ই জুন লোক মারফত কবিরাজ ফারুক হোসেনকে বাসায় ডেকে নিয়ে আসা হয়। ফারুক শাহনাজকে দেখে জিনের আছর করেছে বলে জানায়। এবং এক সপ্তাহের কবিরাজী চিকিৎসায় সে ভালো হবে। এ জন্য দশ হাজার টাকার মৌখিক চুক্তি করে শাহনাজের পরিবারের সঙ্গে। একদিন চিকিৎসা চালিয়ে উন্নতি না হওয়ায় নিজ বাসায় নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেয় কবিরাজ ফারুক। তার কথামতো ১৮ই জুন সন্ধ্যায় কবিরাজের বাসায় পাঠাতে রাজি হয় শাহনাজের পরিবার। নিজের বাসায় নিয়ে কবিরাজ ফারুক ও তার স্ত্রী জেসমিন কবিরাজি চিকিৎসার নামে শারীরিক নির্যাতন চালায় শাহনাজের ওপর। প্রথমে শাহনাজকে ঝাডু দ্বারা পেটানো হয়। পরে হাত ও পায়ের আঙ্গুল মোচড়ানো হয়। এতে শাহনাজ চিৎকার করলে তার গলায় এবং বুকে পা দিয়ে চেপে ধরে জিনকে চলে যেতে বলে ভণ্ড কবিরাজ দম্পতি। নির্যাতনে শাহনাজ দুর্বল হয়ে পড়লে তার বিশ্রামের প্রয়োজন বলে পরিবারকে বাসায় পাঠিয়ে দেয় কবিরাজ। বুধবার রাতে শাহনাজের অবস্থা খারাপ জানিয়ে পরিবারকে ফোন করা হলে তারা কবিরাজের বাসায় গিয়ে শাহনাজের মৃতদেহ ফ্লোরে চাদর মোড়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।
নিহত শিখার মা সুরাইয়া বেগম জানান, কবিরাজ ফারুক ও তার স্ত্রী জেসমিন চিকিৎসার নামে শিখার ওপর অমানুষিকভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায়। শিখার প্রচণ্ড আত্মচিৎকারেও থামেনি তাদের নির্যাতন। মেয়ের চিৎকার দেখে প্রতিবাদ করলে তারা বলে আমরা তো আপনার মেয়েকে মারছি না। মারছি তার সঙ্গে থাকা খারাপ জিনকে। আর চিৎকার তো সে করছে না করছে ওই খারাপ জিন। আপনার সহ্য না হলে পাশের ঘরে গিয়ে বসে থাকেন। একপর্যায়ে কবিরাজ ফারুক ও তার স্ত্রী জেসমিন শিখার হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে বুকের ওপর উঠে আঘাত করতে থাকে। মুখে কাপড় ঢুকিয়ে গলা চেপে ধরে রাখে। তিনি এই হত্যায় ভণ্ড করিবাজ দম্পতির বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এইচ এম জসিম উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় কবিরাজ দম্পতিদের আটক করেছি। নিহত শিখার মা এ ঘটনায় রাতেই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার নং-৩৭। আর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর