× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলাদেশে ২ বছরে অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান সন্তান জন্মদান বেড়েছে ৫১ ভাগ

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) জুন ২২, ২০১৯, শনিবার, ১:০০ পূর্বাহ্ন

দুই বছরে বাংলাদেশে অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান অপারেশনে সন্তান জন্মদান বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৫১ ভাগ। এর ফলে রোগিরা বছরে খরচ করছেন ৪৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। সিজারিয়ান অপারেশনের এই ধারাকে বিশাল বৃদ্ধি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সেভ দ্য চিলড্রেন। তারা নতুন একটি ডাটা উপস্থাপন করেছে। তাতে বলা হচ্ছে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল, এই দুই বছরে অপ্রয়োজনীয় এমন অপারেশন বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৫১ ভাগ। এতে বলা হয়, শুধু গত বছরে প্রয়োজন নেই তবু এমন অপারেশন করানো হয়েছে ৮ লাখ ৬০ হাজার নারীর। অন্যদিকে যাদের এমন অপারেশন প্রয়োজন তাদের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। এসব নারী এই অপারেশন করানোর সামর্থ নেই অথবা তারা এই সুবিধার আওতায় নেই।
সেভ দ্য চিলড্রেনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
 
এই অনুসন্ধানে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশে সিজারিয়ান অপারেশন কিভাবে ফুলেফেঁপে উঠছে এবং তা এক বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে। দেশের সম্পদশালীরা রেকর্ড সংখ্যায় ইচ্ছাকৃতভাবে সিরাজিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়াকে বেছে নিচ্ছেন, যদিও অপ্রয়োজনীয় এমন অপারেশনে মা ও সন্তানের জন্য কোনো কারণ ছাড়াই ঝুঁকি থেকে যায়।

২০১৮ সালে সিজারিয়ান অপারেশন করানো হয়েছে প্রায় ৮ লাখ ৬০ হাজার নারীর। এর মধ্যে শতকরা ৭৭ ভাগ অপারেশন করানো হয়েছে একেবারে খালি খালি। ২০১৬ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৭০ হাজার। পক্ষান্তরে প্রায় ৩ লাখ নারীকে প্রতি বছর সিজারিয়ান অপারেশন করানো একেবারে বাধ্যতামূলক। তারা এই সুবিধা নিতে পারেন না। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বাংলাদেশে সিজারিয়ান অপারেশস শতকরা ৪ ভাগ থেকে ৩১ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সেভ দ্য চিলড্রেন এই খাতকে উন্নততর নিয়ন্ত্রণ, ডাক্তারদের ওপর চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে সেভ দ্য চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ইশতিয়াক মান্নান বলেছেন, এই অপারেশন খুব বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অধিক থেকে অধিক হারে ধনী মায়েরা অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য ভিড় করছেন। তাদের বিশ্বাস, এই অপারেশন তাদের জন্য অধিক স্বস্তির হবে। অথবা হতে পারে, তাদেরকে ভুল বুঝিয়েছেন কোনো চিকিৎসক। পক্ষান্তরে দরিদ্র অনেক নারী, যাদের একান্তই এই অপারেশন দরকার তারা এই সুবিধা পাচ্ছেন না। বিষয়টি বিস্ময়কর।

সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে সিজারিয়ান অপারেশনে জন্ম হয় মোট শিশুর শতকরা ৮০ ভাগ।  এর কারণ, মেডিকেল খাতে দুর্বল নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যান্য বিবেকবর্জিত চর্চা। শেষের শ্রেণিটি এ কাজকে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। ডা. মান্নান বলেন, স্বাভাবিক সন্তান জন্মদানের চেয়ে সংশ্লিষ্টরা অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেয়াকে বেছে নেন আর্থিক সুবিধার জন্য। যদি এক্ষেত্রে কোনো ভুল অথবা ত্রুটিপূর্ণ পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে তার জন্য তাদেরকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় না। তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন মা ও শিশু উভয়কেই প্রয়োজন ছাড়া ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এতে সংক্রমণ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানী, রক্ত জমাট বাঁধা সহ নানা রকম ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়া মায়ের অপারেশন পরবর্তী সুস্থ হতেও সময় লাগে বেশি। স্বাভাবিক সন্তান জন্ম দেয়ার সুবিধাটি এর মাধ্যমে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। স্বাভাবিক উপায়ে সন্তান জন্ম নেয়ার সময় সে যখন ‘বার্থ ক্যানালের’ ভিতর দিয়ে আসে তখন সে একডোজ ‘গুড ব্যাকটেরিয়া’ গ্রহণ করে, যা তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। এর ফলে মা ও সন্তান দু’জনেই দ্রুত একে অন্যের কাছে আসতে পারে। শিগগিরই মায়ের বুকের দুধ পান করতে পারে ভূমিষ্ঠ সন্তান।
 
এক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাংলাদেশে স্বীকৃত ধাত্রীর সংকট। সারাদেশে মাত্র ২৫০০ এমন ধাত্রী আছেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাত থেকে এখাতে ২২০০০ ধাত্রী প্রয়োজন বলে পর্যালোচনায় বলা হয়েছে। কিন্তু যা আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র এক দশমাংশ। এই সঙ্কট সমাধানে ইউএন পপুলেশন ফান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ধাত্রীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে সেভ দ্য চিলড্রেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর