সহায় সম্বলহীন এতিম এক তরুণীর অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে ভালোবাসার তরুণের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত গড়েছেন মাধবদী থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান। নিজ উদ্যোগে আয়োজিত অসহায় ওই তরুণীর বিয়ের অনুষ্ঠানে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে বরপক্ষকে আপ্যায়নসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। শুক্রবার বিকালে নরসিংদীতে সদর উপজেলা কাঠালিয়া ইউনিয়নের আব্দুল্লাহ কান্দী গ্রামে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সরজমিন জানা যায়, ওই তরুণীর নাম উর্মি আক্তার জেরিন। তার বাবার নাম মৃত. মোহাম্মদ আলী। বাবার অবর্তমানে তাদের মা মানুষের বাসায় কাজ করে উপার্জিত টাকায় কোনো রকম খেয়ে পরে তাদের অভাব অনটনের সংসার চালিয়ে আসছিলেন। নিজেদের কোনো সহায় সম্বল না থাকায় তিনি দুই মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের আব্দুল্লাহ কান্দী গ্রামে পুরাতন রেল সড়কের জায়গায় কোনো রকম একটি ছাউনি তুলে বসবাস করে আসছিলেন।
আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় ঘরে বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো উপায় করে উঠতে পারছিলেন না। সমপ্রতি একই ইউনিয়নের চৌঘরিয়া গ্রামের মো. আমির আলীর ছেলে আবু সাঈদ মিয়ার (২৫) সঙ্গে জেরিনের ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা উভয়েই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু মেয়েদের পরিবারের দৈন্যদশা ও তার পরিবারে পুরুষ অভিভাবক না থাকায় ছেলের পরিবারের লোকজন তাদের বিয়েতে অমত করেন এবং ওই মেয়ের সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক না রাখতে ছেলেকে নির্দেশ দেন। এতে মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। ঘটনাক্রমে খবরটি মাধবদী থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ানের কান পর্যন্ত গড়ায়। পুরো ঘটনাটি জেনে তিনি নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ’র (বিপিএম) সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন এবং তার নির্দেশনায় নিজের অভিভাবকত্বে মেয়েটিকে সাঈদ মিয়ার হাতে তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ছেলে পক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা শেষে তারা এ সম্পর্কে সায় দেয়।
অবশেষে আব্দুল্লাহ কান্দীর বিশিষ্ট শিল্পপতি দেওয়ান আলীর বাড়িতে ধুমধাম করে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন মাধবদী থানার ওসি (তদন্ত) সাফায়েত হোসেন পলাশ, উপ-পরিদর্শক এনায়েত কবির মামুন ও সহ উপ-পরিদর্শক মামুন মিয়া।