গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মনে করে, আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বিত্তশালীরা। বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের পরিপন্থী। এ বাজেট নিয়মিত করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে।
আজ রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে ‘সিপিডি বাজেট ডায়ালগ ২০১৯: অ্যান অ্যানালাইসিস অব দ্য ন্যাশনাল বাজেট ফর ২০১৯-২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রস্তাবিত বাজেটের কড়া সমালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বাড়বে। আর সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বিত্তশালীরা।
এছাড়া চলতি অর্থবছরের সঙ্গে তুলনা করলে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি ও এ সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা সব ক্ষেত্রে মানা হয়নি। ইশতেহারে সরকার কৃষকদের বন্ধকমুক্ত ঋণ দেয়ার দেয়ার কথা বলেছিল। তবে বাজেটে সে বিষয়ে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের মোট বাজেটের যত অংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ছিল, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তার চেয়ে কমেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনেও কম বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হলেও তাতে কোনো নতুনত্ব নেই। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে। বাজেটে সরকার ‘কৃষি বীমা’ চালুর যে প্রস্তাব করেছে, সেটিকে সাধুবাদ জানিয়ে এটির দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানায় সিপিডি।
২০০৯-১০ অর্থবছরের সঙ্গে তুলনা করে সিপিডি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেটের আকারে বরাদ্দ কমেছে। ওই সময় মোট বাজেটের ১২ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ছিল। আগামী অর্থবছরে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৭ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, সিপিডির বিশেষ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ডা. ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি কোন সরকারই নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচনী ইশতেহারকে গুরুত্ব দেয়নি। এবারের বাজেটেও সেটাই হয়েছে।