ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রোববার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার শারমিন জাহান। দেড় বছরের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত প্রশ্নফাঁস মামলার চার্জশিট প্রস্তুত করে সিআইডি। ২০১৭ সালে ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তদন্তে নামে সিআইডি। ওই বছরের ১৯শে অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি আবাসিক হলে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মামুন ও রানা নামে দুই শিক্ষার্থীকে। তাদের দেয়া তথ্যে পরদিন পরীক্ষার হল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাফি নামে এক ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীকে। পরে ২০শে অক্টোবর এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়।
সিআইডির তদন্তে একের পর এক জড়িতদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের মাস্টারমাইন্ড নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান এছামী, প্রেস কর্মচারী খান বাহাদুর, তার আত্মীয় সাইফুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বনি ও মারুফসহ ২৮ জনকে। চক্রের সদস্যরা ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পর পর দুই বছরে ফাঁস করা প্রশ্ন নিয়ে সাভারের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার একটি বাসায় ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছিল। এছাড়াও চক্রটি পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রিন্টিং প্রেস থেকে ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করতো। প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতরা অল্পদিনেই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে যায়। চক্রের মূল হোতার নামে প্রায় ২০ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও সম্পদের সন্ধান পায় সিআইডি। এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মানিলন্ডারিং মামলাও করা হয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, চার্জশিটে ১২৫ জনের নাম এলে আরও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের সঠিক নাম-ঠিকানা না থাকায় চার্জশিটে অভিযুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।