আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ভোটাভুটিতে বাংলাদেশের নৈতিক জয়ের পরও জটিলতায় নির্বাচন স্থগিত হওয়ার বিষয়ে আজ কূটনীতিকদের ব্রিফ করবে সরকার। ওই নির্বাচন মনিটরিংয়ে সরকারের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের নিয়ে রাজধানীর এক হোটেলে প্রাতরাশ বৈঠক আয়োজন করছেন।
ওই বৈঠকেই তিনি নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরবেন। আইওএম এর দ্বিতীয় সর্ব্বোচ্চ উপ মহাপরিচালক পদের ওই নির্বাচনে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বাংলাদেশের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গত শুক্রবার জেনেভাস্থ আইওএম হেড কোয়ার্টারে ওই নির্বাচনের ভোটাভুটি হয়। পঞ্চম রাউন্ড পর্যন্ত ভোট গড়ায়। যার চূড়ান্ত পর্বে সুদানকে পরাজিত করে জয়ী হয় বাংলাদেশ। কিন্ত সুদান পরাজয় মেনে না নেয়ায় জটিলতা তৈরি হয়, ফলে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকায় যেসব দেশের দূতাবাস আছে তাদের আমরা আমাদের অবস্থান জানাবো এবং আইওএম-এর নিয়ম যাতে মানা হয়, সেজন্য তাদের সমর্থন চাইবো।’
শুক্রবারের উত্তেজনাপূর্ণ নির্বাচনের শেষ রাউন্ডে শহীদুল হক ৭৫ ভোট পান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সুদানের প্রার্থী পান ৭৩ ভোট। আইওএম-এর ভোটের রেওয়াজ অনুযায়ী দু'জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যাওয় প্রার্থী সড়ে দাঁড়ান। সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রার্থীকে হ্যাঁ-না ভোটের সুযোগ দেওয়া হয় দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন আদায়ে।
এ পদ্ধতি মানতে নারাজ সুদান তথা আফ্রিকান ইউনিয়ন।
গত ১৬ জুন এক টুইট বার্তায় শহীদুল বলেন, ‘আইওএম-এর উপ মহাপরিচালক পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে প্রার্থী করার জন্য সম্মানিত বোধ করছি। আমি আন্তর্জাতিক এই সংস্থার মহাপরিচালকের অধীনে কাজ করে সবার জন্য অভিবাসন সহযোগিতা নিশ্চিত করতে চাই।’
সুদান ছাড়াও আরও ৩ দেশ এই পদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ফল তাদের অনুকূলে না গেলেও তারা তা মেনে নেয় এবং পর্যায়ক্রমে সড়ে দাঁড়ায়। দেশ ৩টি হলো- ফিলিপাইন, আফগানিস্তান ও জর্ডান।
বাংলাদেশ সময় গত শুক্রবার দুপুর ২টায় শুরু হওয়া নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে শহীদুল দ্বিতীয় হয়েছিলেন। প্রথমদিকেই ফিলিপাইন ও জর্দান তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেয়। চতুর্থ রাউন্ডেও শহীদুল দ্বিতীয় অবস্থানে থাকেন। এই রাউন্ড শেষে আফগানিস্তান প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলে শহীদুল প্রথম স্থানে চলে আসেন।
অভিবাসন দুনিয়ার পরিচিত মুখ শহীদুল হক আইওএমে ১১ বছর বিভিন্ন উচ্চ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১২ সালে এ সংস্থা ছাড়েন এবং ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন।