× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একশ টাকার দ্বন্দ্ব /ক্ষমতা এবং আধিপত্যের দাপটে বিপর্যস্ত একটি পরিবার ও সমাজ

মত-মতান্তর

তৌহিদুল হক
২৪ জুন ২০১৯, সোমবার

একটি সমাজ কতোটা এগিয়েছে কিংবা পিছিয়েছে তা বোঝার সহজ উপায় হলো মানুষের প্রতি মানুষের টান বা অনুভূতি কেমন সেটি যাচাই করা। সময়ের তালে সবাই এগিয়ে যায়। মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্রের চরিত্রগত ভাবধারা পরিবর্তন হয়। পরিবর্তন হয় মেজাজ, আচরণিক শিষ্টাচার।

পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় মানুষ জোট গঠন করে, সংঘবদ্ধ হয়। আবার সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষও প্রয়োজনের তাগিদে হয়। বিষয় হলোÑ সংঘর্ষ কতটা শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে সমাপ্ত করা যায়।
কারণ সংঘর্ষ বা দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন বা চিন্তার নতুন ক্ষেত্র উদ্ভাবন হতে পারে। সেরকম দৃষ্টান্ত বৈশ্বিক পরিমন্ডলে সমাজ পরিবর্তনে লক্ষ্যণীয়।

মানুষের জোটবদ্ধ হয়ে চলা এক সংগঠিত নাম রাজনৈতিক ব্যবস্থা। আর এই ব্যবস্থাকে গতিশীল করে রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশে মূল রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠ পর্যায়ের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য অঙ্গ-সংগঠনের অভিষেক। কারণ মূল দল হলোÑ একটি থিকং ট্যাংক। এই থিংক ট্যাংকের চিন্তা, বুদ্ধি, পরামর্শ বাস্তবায়নে কাজ করে অঙ্গ-সংগঠনগুলো।

রাজধানীর যাত্রাবড়ী থানার শনি আখড়ার গোবিন্দপুর নূর মসজিদ এলাকায় দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় শর্টগানের গুলিতে একই পরিবারের পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। শিশু চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। একটি রাষ্ট্রের সামাজিক ভীত দুর্বল হতে যে কাজগুলো বা দৃষ্টান্ত দরকার তা বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে হচ্ছে!! এই শিশুর কাছে সংঘটিত ঘটনার সন্তোষজনক জবাব কী আদৌ দেয়া সম্ভব? যখন একজন মানুষ বিনা অপরাধে বা বিনা সম্পৃক্ততায় কোন কষ্ট ভোগ করে অথবা ক্ষতির সম্মুখীন হয় তখন রাষ্ট্রের সামাজিক কাঠামো টালমাটাল হয়ে যায়। আরো একটি বিষয় দৃষ্টিগোচর যে, একশ টাকা নিয়ে মূলত দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু। একশো টাকার চেয়ে কম টাকার কারণেও দ্বন্দ্ব হতে পারে। তবে সেটি কতোদূর যেতে পারে?

ঘটনার স্বাভাবিকতা যদি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, গালাগালি কিংবা সংক্ষিপ্ত চড়-থাপ্পর পর্যন্ত দিয়ে গড়াতো তবে বাংলাদেশের সামাজিক শিষ্টাচার অনুযায়ী মেনে নিতে কষ্ট হতো না। যে শর্টগান দিয়ে গুলি করা হয়েছে সেটি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। যে পর্যায়ের মানুষজন এ কাজটি করেছে তা উপর মহল থেকে কোনো আর্শীবাদ না থাকলে সম্ভব নয়। কারণ দরিদ্র মানুষজন নিজের অভাব মেটাতে নিজেদের ব্যস্ত রাখে। যখনই অন্যায়ভাবে কিংবা অপ্রত্যাশিতভাবে কোনো সাড়া পায় তখন অনেকে দ্রুত সম্পৃক্ত হয়। এই দ্রুত সম্পৃক্ত হওয়া মানুষ দ্রুত বিপত্তি ঘটায়। সংশ্লিষ্ট ঘটনাটির বিশ্লেষণ অন্তত তাই বলে।

যে দলেরই হোক অঙ্গ সংগঠনগুলো সঠিক ব্যক্তি দ্বারা পরিচর্চা না হলে সেখানে বিপত্তি ঘটবে। বিপত্তি বিপর্যয় বয়ে আনবে। এভাবে মানুষের মনে রাজনীতি ও রাজনৈতিক পেশাজীবিদের সম্পর্কে মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরী হয়।

ঘটনা পরম্পরায় এই ক্ষোভ থেকে রাজনীতির সাথে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা দূরত্বে অবস্থান করে। নিজ দলের বাইরে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। ফলে মানুষের মধ্যে কষ্ট বাড়ে, বাড়ে না বলা ক্ষোভ। মানুষ উত্তর দেওয়ার জায়গা খোঁজে, মানবতার চাহিদা মেটানোর মমত্ব খোঁজে। খোঁজে নীড়, যেখানে সঠিক রূপায়ন হয় সামাজিক সম্প্রীতি আর সম্মানজনক আবেগের।



লেখক

সমাজ ও অপরাধ গবেষক

সহকারী অধ্যাপক
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইল:  [email protected]
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর