× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

১১ লাখ রোহিঙ্গার হাতে ২২ লাখ সিম

এক্সক্লুসিভ

সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া থেকে
২৫ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার

উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত ১১ লাখ রোহিঙ্গার হাতে অবৈধ ২২ লাখের অধিক সিমকার্ড চালু রয়েছে বলে ধারণা করছেন এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। সমপ্রতি ৭০টি সিমকার্ডসহ পুলিশের হাতে ধৃত রাজাপালং গ্রামের আবুল কাশেম (৩৫), কুতুপালং গ্রামের মো. হাসান (২৮) এ দুজন মোবাইল কোম্পানির স্থানীয় এস.আর দাবি করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
উখিয়া সদর এলাকার সিম ব্যবসায়ী আমিন সার্ভিস পয়েন্টের স্বত্বাধিকারী মো. আমিন জানান, অভিনব কায়দায় স্থানীয়দের মাধ্যমে নিবন্ধিত সিম কার্ড রোহিঙ্গাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করছে বিভিন্ন কোম্পানির এস.আর নামধারী একাধিক জালিয়াত চক্র। তিনি বলেন, একেক জন রোহিঙ্গার হাতে একাধিক মোবাইল কোম্পানির সিম রয়েছে। ফলে উখিয়া টেকনাফে ১১ লাখ রোহিঙ্গার হাতে কমপক্ষে ২২ লাখের অধিক মোবাইলের অবৈধ সিম কার্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ছাড়া এত সিম কার্ড রোহিঙ্গার হাতে কীভাবে গেল এ প্রশ্নের সঠিক জবাব কারো জানা নেই।
উখিয়া স্টেশনের জিবরান টেলিকমের মালিক এমদাদুল হক ভুট্টো জানান, রোহিঙ্গাদের হাতে সিম পৌঁছে দিতে ক্যাম্প এলাকায় একাধিক জালিয়াত চক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের সিম প্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে।
তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা সিম এনে রোহিঙ্গাদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
কুতুপালং গ্রামের স্থানীয় চাকরিজীবী দুলাল বড়ুয়া (২৫) ও রিপন বড়ুয়া (২২) জানান, স্থানীয়দের ব্যবহৃত মোবাইলে নেটওয়ার্ক না থাকলেও রোহিঙ্গাদের মোবাইলে ২৪ ঘণ্টা নেটওয়ার্ক থাকে। তারা ক্যাম্প থেকে সরাসরি রাখাইনে বসবাসরত তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলছে। তারা বলেন, স্থানীয়দের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহারের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো অপ্রীতিকর ঘটনায় স্থানীয়রা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছে। তারা বলেন, একমাত্র মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা যতই অপকর্ম করুক না কেন তা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নজরে আনা কঠিন। কারণ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর ব্যবহৃত মোবাইল সিম স্থানীয় যেকোনো এক ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের হাতে সিমের বিষয়টি আমি একাধিকবার উখিয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তুলেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রোহিঙ্গাদের হাতে সিম থাকার কারণে যেকোনো অপরাধ করে তারা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। তারা ফেসবুক, হোয়াটস আপেও গ্রুপ তৈরির মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন তথ্য পাচার করছে। তাছাড়া মোবাইলের পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ১

মাধ্যমে তারা যেকোনো মিথ্যা তথ্য সহজেই বিভিন্ন ক্যাম্পে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এতে কোনো সন্ত্রাসী ধরতে গেলেও পুলিশ রোহিঙ্গাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
উখিয়া থানার ওসি তদন্ত নুরুল ইসলাম জানান, এস.আর নামধারী এক শ্রেণির প্রতারক সহজ সরল স্থানীয়দের ফিংগার প্রিন্ট ও আইডি কার্ড ব্যবহার করে ওপেন সিম কার্ড চড়া দামে রোহিঙ্গাদের কাছে বিক্রি করার কথা স্বীকার করছে। তারা বলেছে, তাদের মত অসংখ্য এস.আর ওপেন সিম কার্ড ক্যাম্পে অবস্থান করে রোহিঙ্গাদের কাছে বিক্রি করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, এ ব্যাপারে ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি মামলা করে গত ২০শে জুলাই আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গাদের হাতে অবৈধ সিম কার্ডের ব্যাপারে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা করা হয়েছে এবং এ নিয়ে করণীয় কি তা সুনির্দিষ্ট নির্দেশাবলী চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়াও পুলিশ অবৈধ সিম কার্ড উদ্ধার এবং সংশ্লিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে তৎপর রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর