× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জানাজায় হামলা: ব্যানারে শোক জামায়াত নেতার মৃত্যু ঘিরে বিভক্ত ছাত্রলীগ

দেশ বিদেশ

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
২৫ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার

 জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজায় শনিবার দুপুরে হামলা চালায় চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ। এতে জামায়াত-শিবির ও ছাত্রলীগের একটি অংশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে কলেজ ছাত্রলীগের। তবে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে কলেজ সংলগ্ন প্যারেড ময়দানে জানাজা সম্পন্ন হয় মুমিনুল হক চৌধুরীর।
জানাজায় অংশ নেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের আওয়ামী লীগের এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী। মূলত তারই শ্বশুর মুমিনুল হক চৌধুরী। যার মৃত্যুতে শোকও প্রকাশ করেছেন এমপির অনুসারী ছাত্রলীগের একটি অংশ।
আর এ নিয়ে গত তিনদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে দু’গ্রুপে বিভক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর মধ্যে। এরমধ্যে শুধু চট্টগ্রাম মহানগর নয়, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগেও জ্বলছে তুষের আগুন।
যাদের একটি অংশ এমপি নদভীর অনুসারী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার তোড়জোড়ও শুরু করেছেন।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সমপাদক সুভাষ মল্লিক বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্বশুর হওয়ার সুবাদে জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা চট্টগ্রাম কলেজ সংলগ্ন প্যারেড ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এমনকি এমপির অনুসারী ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জানাজায় অংশ নিয়েছেন। অনুসারী ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ব্যানার টাঙিয়ে শোকও প্রকাশ করেছেন। যা সত্যিই দুঃখজনক।
সুভাষ মল্লিক অভিযোগ এনে বলেন, জানাজা অনুষ্ঠানে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে জামায়াত নেতা পরিচয় গোপন করে তিনি অনুমতি নিয়েছেন। এমপি সাহেবের কারণে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এই অংশের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, সাতকানিয়া- লোহাগাড়ার বিভিন্ন এলাকায় মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। সেই ব্যানারের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
ব্যানারে লেখা আছে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি মহোদয়ের শ্বশুর ও রিজিয়া রেজা চৌধুরীর শ্রদ্ধেয় পিতা আলহাজ মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শোকার্তে-আব্দুল মান্নান, সভাপতি, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ।
ব্যানার সাঁটানো আব্দুল মান্নানের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এমপির অনুসারী ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, মুমিনুল হক যে জামায়াত নেতা তা তাদের জানা ছিল না। মূলত আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্বশুর ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরীর বাবার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, সাতকানিয়ায় বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। কয়েক মাস আগে ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত হয়। এই বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান। তবে যারাই এ কাজ করেছে, তারা এ কাজ জেনে বুঝে করেনি।
এদিকে, জামায়াত নেতা পরিচয় গোপন করে জানাজার অনুমতির বিষয়ে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসান বলেন, শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এমপি নদভী তাকে টেলিফোন করে প্যারেড মাঠে তার শ্বশুরের জানাজার জন্য সিএমপি কমিশনারের অনুমতি নেয়া হয়েছে বলে জানান। তিনি কলেজ মাঠে জানাজায় সহযোগিতা করতেও অনুরোধ করেন।
সে সময় কলেজের অডিটোরিয়ামে ঈদ পুনর্মিলনী চলছিল। সংসদ সদস্যের ফোন পেয়ে তিনি অনুষ্ঠানে সমবেত শিক্ষকদের প্যারেড মাঠের জানাজায় অংশ নিতে অনুরোধ করেন। তার দাবি, কলেজ মাঠে জানাজার বিষয়টি জানানোর সময় এমপি নাদভী শুধু মুমিনুল হক চৌধুরীকে তার শ্বশুর হিসেবে উল্লেখ করেন। মুমিনুল হক চৌধুরী যে জামায়াতের শীর্ষ নেতা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তিনি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবুর রহমানও বলেছেন, মুমিনুল হক চৌধুরী যে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত সে বিষয়ে এমপি নদভী তাকে কোনো ধারণা দেননি। এমপির শ্বশুর হিসেবেই প্যারেড মাঠে তার জানাজার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। ফলে ছাত্রলীগের হামলা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্যারেড ময়দানে তার জানাজা সম্পন্ন করা হয় বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর