× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইস্তাম্বুলে এরদোগানের দলের ভরাডুবি

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) জুন ২৫, ২০১৯, মঙ্গলবার, ৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

তুরস্কের বড় ও গুরুত্বপূর্ণ শহর ইস্তাম্বুলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগানের ক্ষমতাসীন পার্টি একেপি। সেখানে পুনরায় মেয়র নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের প্রার্থী একরেম ইমামোগলু শতকরা ৫৪ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। প্রায় সব ভোট গণনায় তিনি এগিয়ে রয়েছেন ৭ লাখ ৭৫ হাজারেরও বেশি ভোটে। মার্চে অনুষ্ঠিত ও পরে বাতিল হয়ে যাওয়া নির্বাচনের চেয়ে এবার তিনি আরো বিপুল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। ওই নির্বাচনে তিনি মাত্র ১৩ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। মার্চের নির্বাচনের ফলকে  ইমামোগলু অতিক্রম করেছেন বিস্ময়করভাবে। এবার যে বিশাল ব্যবধান বাড়িয়েছেন তাতে তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী এমন প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
ক্ষমতাসীন একে পার্টি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে মার্চের ফল বাতিল ঘোষণা করে।
নির্বাচনে একরেম ইমামোগলুর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। এক টুইটে তিনি বলেছেন, একরেম ইমামোগলুকে অভিনন্দন জানাই, তিনি প্রাথমিক ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনে এই ফলকে  প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ওপর চরম এক আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, তিনি এর আগে বলেছিলেন, ইস্তাম্বুলে যিনিই জিতবেন তিনিই তুরস্ক জিতবেন। তারই কথার অনুরণন শোনা গেছে বিজয়ী ইমামোগলুর কণ্ঠে। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের ফল বলছে ইস্তাম্বুল ও সারা দেশের জন্য নতুন এক যাত্রা শুরু হলো। আমরা ইস্তাম্বুলে নতুন একটি যুগ শুরু করছি। এতে থাকবে ন্যায়বিচার, সমতা ও ভালোবাসা। তার এ কথার অর্থ, তিনি বা তার দল শুধু ইস্তাম্বুল জয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। তারা পুরো তুরস্ককে জয় করার মানসে মাঠে নেমেছেন। আর সেখানেই প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বড় ভয় থাকার কথা। তিনি একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান প্রচেষ্টায় রক্ষা পেয়েছেন। তারপর ক্ষমতাকে পোক্ত করেছেন সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে। নিজের হাতে নিয়েছেন প্রচুর ক্ষমতা। কিন্তু তার সেই ক্ষমতার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে বিরোধী পক্ষ। বিরোধীদের মত ও পথের সঙ্গে জনমত যে কীভাবে এক হয়ে উঠেছে সদ্য অনুষ্ঠিত ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচন তারই প্রমাণ। সারা দেশে যদি এমন অবস্থা সৃষ্টি হয় তাহলে এরদোগানের মসনদ কেঁপে উঠতে পারে। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক ফলাফলে নির্বাচিত মেয়র ইমামোগলু। তিনি বলেছেন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট, আপনার সঙ্গে সম্প্রীতি বজায় রেখে কাজ করতে আমি প্রস্তুত। এরদোগানকে দেখা হয় আধুনিক সময়ে তুরস্কের সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা হিসেবে। কিন্তু এই নির্বাচনের ফল তার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় আঘাত বলে মন্তব্য করেছে বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের ফল বলছে এরদোগান নতুন নির্বাচন আহ্বান করে ভীষণ বড় ভুল করেছেন। মার্চের নির্বাচনে ইমামোগলু মাত্র ১৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু এবার নির্বাচনে সেই ব্যবধান প্রায় ৮ লাখ ছুঁই ছুঁই। ফলে এরদোগানের দলের এবং তার নিজের ব্যক্তিদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে এতে। এর ফলে তার একে পার্টিতে বিভক্তি দেখা দিতে পারে। এরদোগান পরবর্তী যুগ নিয়ে আলোচনা ত্বরান্বিত হতে পারে। এ অবস্থায় ২০২৩ সালের আগে নির্বাচন হওয়ার শিডিউল রয়েছে। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই নির্বাচন আগেভাগে চেয়ে বসতে পারে কোনো কোনো পক্ষ। তাই ইস্তাম্বুলের নির্বাচনের ফলকে অনেকেই পূর্বাভাস হিসেবে দেখতে পারেন।

কীভাবে বিরোধীরা বিজয়ী হলো? হ্যাঁ, একরেম ইমামোগলু মানুষের মাঝে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছেন। কথা বলেছেন হাসিমুখে। এ ইস্যুই ব্যাপকভাবে কাজে দিয়েছে। বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপল্‌স পার্টি (সিএইচপি) চূড়ান্ত দফায় দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে প্রেসিডেন্টকে কাউন্টার বা মোকাবিলা করতে হবে। ইস্তাম্বুলকে শাসন করার জন্য সিএইচপিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৫ বছর। এই দীর্ঘ সময় তারা মনে করেছে, সফলতা অর্জনে তারা অক্ষম। কিন্তু এবার তারা উপযুক্ত ও মোক্ষম সুযোগ নিয়েছে।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন কারা?
রিপাবলিকান পিপল্‌স পার্টি ধর্মনিরপেক্ষ। ইস্তাম্বুলের বেলিকডুজু জেলায় এ দলের মেয়র ইমামোগলু (৪৯)।  কিন্তু মার্চের নির্বাচনে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগে খুব কম মানুষই তার নাম জানতেন এবং চিনতেন। অন্যদিকে এরদোগানের একেপি দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বিনালি ইলদিরিম। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এ সময়ে তুরস্ক প্রেসিডেন্সিয়াল গণতন্ত্রে পরিণত হয়। নতুন পার্লামেন্টে ফেব্রুয়ারিতে তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন। এর আগে পরিবহন ও যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর