× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের শীর্ষে বাংলাদেশ /অবকাঠামোর উন্নয়নে বিনিয়োগ বেড়েছে- সালমান এফ রহমান

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২৫ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার

দক্ষিণ এশিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগের শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ৩৬০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ  ৩০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এটি ২০১৭ সালে ছিল ২১৫ কোটি ডলার। আর ২০১৬ সালে ছিল ২৩৩ কোটি ডলার। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনসিটিএডি) কর্তৃক প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রতিবেদন ২০১৯’-এ এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

এ সময় বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ার কারণ সম্পর্কে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন হওয়ায় দেশে বিনিয়োগ বাড়ছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস দেয়ার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগ আইনের সংস্কার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ২৫১ কোটি ১৬ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সে বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। সে হিসেবে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। পাশের দেশ ভারতে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ৩ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে যা দাঁড়ায় ৪ হাজার ২২৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ে ৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মালদ্বীপে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৯ কোটি ২৭ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ১৮ লাখ ডলার। বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১২ শতাংশ। নেপালে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১২ কোটি ৯২ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ হয় ১৬ কোটি ৮ লাখ ডলার। বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ২৪ শতাংশ। পাকিস্তানে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩২৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সে বিনিয়োগ হয় ২৩৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ২৭ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১৩৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সে বিনিয়োগ হয় ১৬১ কোটি ৫ লাখ ডলার। বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। ভুটানে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৯৯ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৫৯ লাখ ডলার। বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৬০ শতাংশ। এছাড়া ২০১৮ সালে ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ। ভারতে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে সে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৪ হাজার ২২৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলার।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদন অনুসারে বিশ্বের কম উন্নত দেশগুলোর মধ্যেও সবচেয়ে বেশি এফডিআই প্রবাহ বেড়েছে বাংলাদেশের। টানা ৩ বছর ধরে কমছে বৈশ্বিক বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ। ২০১৮ সালে বিশ্বে ১৩ শতাংশ কমে যায় এর পরিমাণ। আর এসময় বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই আকর্ষণে রেকর্ড পর্যায়ের অগ্রগতি করেছে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, গত বছর দেশে এফডিআই বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। বিদ্যুৎ ও পোশাক শিল্প খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ আকর্ষণের ফলে এ অগ্রগতি হয়েছে।

দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো আরো বড় আকারে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করেন আলোচকরা। তাগিদ দেন এ বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সফলতাগুলো গ্রহণ করার।

গত বছর জাপানি তামাক কোম্পানি জাপান টোব্যাকো (জেটি) বাংলাদেশের আকিজ গ্রুপের মালিকানায় থাকা ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড কিনে নেয়ায় আগের বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বিদেশি বিনিয়োগ বেশি এসেছে। জেটি ইউনাইটেড টোব্যাকো কিনতে খরচ করেছে ১৫০ কোটি ডলার। এ ছাড়া গত বছর বিদ্যুতেও বড় আকারের বিনিয়োগ পাওয়া গেছে। বস্ত্র ও পোশাক খাতে বিনিয়োগ এসেছে ১৩০ কোটি ডলার।

বাংলাদেশে জাপানি টোব্যাকো কোম্পানির বিনিয়োগ প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমান বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আসলে আমরা না করতে পারি না। আমরা যে কোনো বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই। তিনি জানান, ২০২১ সাল নাগাদ ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে ৫০ এর মধ্যে আসবে বাংলাদেশের অবস্থান। এছাড়া দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১০ বছর ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটা ধারাবাহিকতা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও রয়েছে। বিনিয়োগের জন্য এখন উপযুক্ত জায়গা বাংলাদেশ। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের অন্যতম এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এসব কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বেড়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর