× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চরম দুর্ভোগ

দেশ বিদেশ

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২৫ জুন ২০১৯, মঙ্গলবার

১৭ই জুন থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকা-সিলেট সড়ক যোগাযোগ। প্রায় ৮ দিন। এ কারণে ট্রেনে ছিল যাত্রীর চাপ। এই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা। ট্রেনে সিট খালি নেই। ফাঁকা জায়গায়ও পা ফেলার সুযোগ নেই। যাত্রী ঠাসা। জরুরি প্রয়োজনে ট্রেনে চেপে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন যাত্রীরা।
শত দুর্ভোগ। শিডিউল লণ্ডভণ্ড। এরপরও একমাত্র ভরসা রেলপথেই মানুষের গন্তব্যে পৌঁছার তাগিদ। হঠাৎ করে গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রেলপথেও বিপর্যয়। কুলাউড়ার বরমচালের ব্রিজ চেপ্টে বগি খালে। রেলপথও বন্ধ হয়ে গেল। এ কারণে রোববার রাত থেকে কার্যত গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল সিলেট। একমাত্র খোলা ছিল আকাশপথ। কিন্তু সেখানেও ছিল টিকিট সংকট। বাড়তি দাম দিয়েও মিলেনি বিমানের টিকিট। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিলেটে দুর্ভোগ ছিল চরমে। বিশেষ করে গত ৮ দিন থেকে সিলেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক দ্রব্যই আসেনি। দাম বেড়ে যায় পণ্য সামগ্রীর। তবে, গতকাল দুপুরের পর থেকে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। সিলেট থেকে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যাত্রীবাহী বাস চলে গেছে। কুলাউড়ার বরমচালে ট্রেন দুর্ঘটনার পর সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাতের মধ্যে ভেঙে যাওয়া সেতু মেরামত করে। আর সকালে তারা যানবাহন চলাচলের ঘোষণা দেয়। রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল সিলেট বিভাগ। এতে করে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চারও হয়। এর কারণ সড়কপথ ও রেলপথ নিয়ে সিলেটের মানুষের দুঃখের অন্ত নেই। বার বার বিপর্যস্ত হয় যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ওই দুটি রুট। এ জন্য দুটি দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে সরব রয়েছেন সিলেটের মানুষ। এই দুটি দাবি হচ্ছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে ফোরলেনে রূপান্তর ও সিলেট-আখাউড়া রেললাইনকে ডাবল করা। কিন্তু দুটি দাবিই এখনো পূরণ হয়নি। এক সঙ্গে সড়কপথ ও রেলপথ বন্ধ হয়ে পড়ায় এ নিয়ে সমালোচনার অন্ত নেই সিলেটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন সিলেটের সচেতন মানুষ। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কীম তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন- ‘সিলেটবাসীর জন্য ঢাকার চেয়ে গৌহাটি যাওয়া এখন সহজ।’ অ্যাডভোকেট তাজউদ্দিন দাবি জানিয়ে তার স্ট্যাটাসে লিখেন- ‘সড়ক ও রেলপথ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত সিলেট-ঢাকা রুটের সকল বিমানের ভাড়া ১ হাজার টাকা ও প্রতিদিন অন্তত ১০টি ফ্লাইট চালু করা হোক।’ সাংবাদিক শাহ মুজিবুর রহমান তার স্ট্যাটাসে অনেক দাবি তোলেন। এগুলো হচ্ছে- ‘সিলেটের রেলপথ এবং সড়কপথ আধুনিকায়নের সিদ্ধান্ত এখনই নিতে হবে। সিলেটের রেলপথে পুরনো বগির জঞ্জাল সরিয়ে নেয়া হোক। যত লক্কড়ঝক্কর মার্কা বগি এগুলো সিলেট থেকে সরিয়ে নিতে হবে। আর দেরি করা চলবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাবনা অনুযায়ী ঢাকা-সিলেটে নতুন একটি ট্রেন চালু করা হোক দ্রুত।’ সিলেটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত ৮ দিনে সিলেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, কাঁচামাল সিলেটে আসতে পারেনি। রাস্তায়ই এগুলো পচে গেছে। এ কারণে সিলেটের বাজারে দাম বেশি ছিল। গতকালও এই দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক জানিয়েছেন, গতকাল দুপুর ১২টা থেকে তারা সিলেট থেকে বাস ছাড়তে শুরু করেছেন। ব্রিজ মেরামত হওয়ার পর সওজ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিলে তারা বাস ছাড়েন। বিকালের পর থেকে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে, রাতে ট্রেন যোগাযোগের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কুলাউড়ার বরমচালে ট্রেন দুর্ঘটনার সময় সিলেটগামী পারাবত, উপবন, উদয়ন ট্রেন রাস্তায় আটকা পড়ে। এ কারণে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে উঠে। ট্রেন চলাচল অনিশ্চিত হওয়ার কারণে গতকাল সকালে বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া যাত্রীরা পায়ে হেঁটে কিংবা হালকা যানবাহনে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
ডিও দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলে ভেঙে যাওয়া শাহবাজপুর সেতু দ্রুত মেরামতের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে ডিও লেটার (আধা সরকারিপত্র) দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন। রোববার পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ ডিও লেটার পাঠানো হয়। পত্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, চা-শিল্পের জন্য বিখ্যাত সিলেট শহরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন প্রচুর ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থী আসেন। যার কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। সম্প্রতি এ মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শাহবাজপুর সেতু ভেঙে গেলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প পথে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এ কারণে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভেঙে যাওয়া এ সেতু মেরামতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর