বাংলাদেশ সফরে আসছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি নাক-ইয়োন। আগামী ১৩ই জুলাই তিন দিনের সরকারি সফরে ঢাকা আসছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে কোরিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতার এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। হাই প্রোফাইল ওই সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের বিদ্যমান সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় যাবে বলে আশা করছে ঢাকা। সফর প্রস্তুতি নিয়ে এরমধ্যে ঢাকায় বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভাও হয়েছে। ওই সভায় বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার প্রধানের সফরকে সর্বোচ্চভাবে সফল করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তার সফরে ঢাকার অগ্রাধিকার নিয়েও কথা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র কোরিয়া এখন নানা কারণে রেয়াতি ঋণ (কনসেশনাল লোন) দিতে আগ্রহী নয়। ফলে দেশটির ঋণ কমার্শিয়াল লোন পেতে বাংলাদেশকে এখনও সুনির্দিষ্ট প্রকল্প এবং পরিকল্পনা নিতে হবে। ওই লোনের সুদ দুই শতাংশের নিচে রাখাসহ শর্তাবলি সহজ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের এলডিসি থেকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার প্রাথমিক শর্ত সফলভাবে পূরণ করেছে। ফলে, কোরিয়া রেয়াতি ঋণের পরিবর্তে বাণিজ্যিক লোনেই আগ্রহ দেখাচ্ছে। ঢাকা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছে জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, লোন বা অনুদান যাই হোক বাংলাদেশে কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়ুক এটাই আমরা চাই। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কোরিয়া বাংলাদেশকে কোইকার মাধ্যমে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির ওই মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশপাশি রাজনৈতিক সমর্থন চায় ঢাকা । কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সফরে এ নিয়ে আলোচনা হবে। জলবায়ূ পরিবর্তন জনিত সংকট মোকাবিলায়ও দেশটির সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ। সূত্র এ-ও বলছে, কোরিয়ান ইপিজেড ইস্যুটি দীর্ঘ দিন ঝুলে আছে। এ নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এলপিজি সেক্টরে ইনভেস্টমেন্ট বাড়ানোর তাগিদ থাকবে ঢাকার। একই কোরিয়ার বাজারে বাংলাদেশী পণ্য প্রবেশ সহজীকরণেও জোর দেয়া হবে। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে নিয়মিত সফর বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে সৌহার্দ্য বাড়ানোর তাগিদ থাকবে। দেশটিতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এবং প্রফেশনালদের বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করার সূযোগ অবারিত করার বিষয়েও আলোচনা হবে। বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নেয় কোরিয়া। এটি আরও বাড়ানোর উপায় নিয়েও কথা হবে। সংস্কৃতি বিনিময়েও জোর থাকবে। উল্লেখ্য, কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবেন।