× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা শিগগিরই

দেশ বিদেশ

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
২৬ জুন ২০১৯, বুধবার

গ্যাসের দাম বাড়তে পারে আগামী মাস থেকে। জুলাই মাসে দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিতে পারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এ ব্যাপারে বিইআরসি’র এক সদস্য মানবজমিনকে  বলেছেন, প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি গ্রাহকরা জানতে পারবেন।
সংশ্নিষ্টদের মতে, আমদানি করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কারণে বাড়তি চাপ পড়েছে জ্বালানি খাতে। এলএনজি আমদানি ও জ্বালানি খাতে সরকারের ভর্তুকির ওপর নির্ভর করছে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির হার। ভর্তুকি বাড়লে দাম বৃদ্ধির হার কমবে। বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও সমপ্রতি গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম সমন্বয় করা না গেলে ভর্তুকি বাড়বে।
জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এলএনজি’র কারণে বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহে ব্যয় হচ্ছে ১৪ টাকা। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ঘনমিটারে সাত টাকার বেশি লোকসান দিয়ে তা বিক্রি হচ্ছে ৭ দশমিক ১৭ টাকায়।
চলতি বছরে এ খাতে আরও ছয় হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রয়োজন। এর মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে চলতি অর্থবছরে তিন হাজার কোটি টাকা সহায়তা দেয়ার কথা থাকলেও তা পাওয়া যায়নি। আগামী অর্থবছরে এলএনজি খাতে ব্যয় হতে পারে ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র। এরপরও ঘাটতি থাকবে ছয় হাজার কোটি টাকা। সেই ঘাটতি সামাল দিতেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে বিইআরসিতে বিতরণ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে গ্যাসের দাম গড়ে ১০২ শতাংশ বৃদ্ধির  প্রস্তাব করা হয়। বাসাবাড়িতে এক চুলার বর্তমান দর ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৪০ টাকা করার আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ, সিএনজি, সার, ক্যাপটিভ পাওয়ার, শিল্প-বাণিজ্যসহ সব খাতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ নিয়ে গত মার্চে গণশুনানির আয়োজন করা হয়। বিইআরসি আইন অনুসারে শুনানির ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনকে সিদ্ধান্ত জানাতে হয়। জুনে সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। আইনে আরও উল্লেখ রয়েছে, কমিশন যদি মনে করে কোম্পানির কাছ থেকে আরও তথ্য নিতে হবে তাহলে সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে। তাই জুনে সময়সীমা ফুরালেও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জুলাই মাসে নেয়া হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা। এর আগে গত বছরের জুনেও গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে গণশুনানি হয়েছে। কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় তখন দাম বাড়ানোয় সরকারের সাড়া মেলেনি। তাই গত ১৬ই অক্টোবর সরকারকে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়ার সুপারিশ করে গ্যাসের দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বিইআরসি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশনের এক সদস্য বলেন, তারা গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আইনি বাধ্যবাধ্যকতা মেনে জুলাইয়ে দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। কমিশনের ওই সদস্য জানান, শুনানিতে পাওয়া মতামত যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। বিতরণ কোম্পানিগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব করা হয়েছে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে জ্বালানি খাতে অযৌক্তিক নানা ব্যয় হচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা গেলে বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব। দক্ষতার সঙ্গে সমন্বয় করা হলে এলএনজি আমদানির ঘাটতি কমানো যেত। এরপর যে ঘাটতি থাকত তা জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল থেকেই পূরণ করা সম্ভব হতো। দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা কমলে সরকারকে ভর্তুকিও দিতে হতো না, গ্রাহককেও বাড়তি দাম দিতে হতো না দাবি করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, কিন্তু সমস্যা সমাধানের চেয়ে কর্তৃপক্ষ সরাসরি দাম বাড়ানোর ব্যাপারেই বেশি উৎসাহী। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ  বৃদ্ধি করা হয়। ওই বছরের মার্চ ও জুলাই থেকে তা দুই ধাপে কার্যকর হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর