× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফতোয়া খারিজ করলেন নুসরাত, তীব্র বিতর্ক ভারতে

ভারত

কলকাতা প্রতিনিধি
(৪ বছর আগে) জুন ৩০, ২০১৯, রবিবার, ১:২৯ পূর্বাহ্ন

অভিনেত্রী ও সাংসদ নুসরাত জাহান বিয়ের পর সংসদে গিয়ে লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছিলেন। শাড়ি, মেহেন্দি, সিঁদুর ও মঙ্গলসূত্র পরে যখন শপথ নিয়েছিলেন তখন ফোকাস ছিল তার দিকেই। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নুসরাত নিজেকে পরিচয় দিয়েছিলেন নুসরাত জাহান রুহি জৈন হিসেবে। সেই সঙ্গে তিনি ঈশ্বরের নামে শপথ নিয়েছিলেন। এর পর থেকেই সোস্যাল মিডিয়ায় নুসরাত ট্রোলড হচ্ছিলেন। এবার কট্টরবাদীদের রোষের মুখে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদ। ধর্ম ও সংস্কৃতিকে অবমাননা করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করা হয়েছে। দেওবন্দের কট্টরবাদী সুন্নি সংগঠন ‘দারুল-উলুম’-এর ইমাম মুফতি আসাদ ওয়াসমি ফতোয়া জারি করে বলেছেন, আমরা জানতে পেরেছি, নুসরাত জৈন ধর্মের একজনকে বিয়ে করেছেন।
ইসলাম বলে, একজন মুসলমান শুধু মুসলমানকেই বিয়ে করতে পারেন। তার উচিত ছিল একজন মুসলিমকেই বিয়ে করা। শরিয়ত সেটাই বলে। সেই সঙ্গে সিঁদুর দেওয়া এবং মঙ্গলসূত্র পরার জন্যও নুসরাতের সমালোচনা করা হয়েছে। মুফতি আরও বলেছেন, নুসরাত একজন অভিনেত্রী। অভিনেত্রীরা ধর্মের শাসন মানেন না। যা ইচ্ছা তা-ই করেন। সেটাই সংসদে দেখা গিয়েছে। তিনি সংসদে সিঁদুর এবং মঙ্গলসূত্র পরে এসেছিলেন। তবে দেওবন্ধের  ফতোয়ার মুখেও নিজের বিশ্বাসে অনড় তৃণমূল সাংসদ নুসরাত জাহান শনিবার টুইটারে লিখেছেন, কোনও ধর্মের কট্টরপন্থীদের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিলে বা প্রতিক্রিয়া জানালে সেটা শুধু ঘৃণা ও হিংসাই ছড়ায়। ইতিহাস তার সাক্ষী। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, সকলকে নিয়ে যে ভারত, আমি তার প্রতিনিধি। যে ভারত জাতপাত-ধর্মের সমস্ত বাধার ঊর্ধ্বে। সব ধর্মকেই আমি শ্রদ্ধা করি। এখনও আমি একজন মুসলিম। এবং আমি কী পরব, তা নিয়ে কারও মন্তব্য করা উচিত নয়। বিশ্বাসের স্থান পোশাক-সাজসজ্জার উপরে। বিশ্বাসের মানে সব ধর্মের অমূল্য শিক্ষাগুলিকে মনে গ্রহণ করা ও তা পালন করা। কয়েকদিন আগেও এক সাক্ষাৎকারে নুসরাত বলেছিলেন, আমার মাথায় সিঁদুর দেখে অনেকে প্রশ্ন করেছেন, আমি কি হিন্দুকে বিয়ে করে হিন্দু হয়ে গেলাম? আমার তো মনে হয় কোন ধর্ম অনুসরণ করব, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সকলের রয়েছে। আমি জন্মসূত্রে মুসলিম। সেটাই অনুসরণ করছি। কিন্তু সব ধর্ম এবং তার নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধা রয়েছে আমার। আমি এবং আমার স্বামী আমাদের ধর্ম পালন করছি। আমার তো মনে হয় এটাই স্বাভাবিক। সংসদে প্রথম দিন প্রবেশের সময় সিঁড়িতে প্রণাম করা প্রসঙ্গে নুসরাত বলেছেন, স্কুলে বা পরিবারে তিনি সেই শিক্ষাই পেয়েছেন। কাজ তার কাছে পবিত্র জিনিস। সংসদে নতুন পথ চলা শুরুর আগে তাই শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। গত ১৯ জুন তুরস্কের বোদরুমে কলকাতার বস্ত্র ব্যবসায়ী নিখিল জৈনকে বিয়ে করেছেন নুসরাত। তবে নুসরাতের বিরুদ্ধে মৌলবীদের ফতোয়ার প্রতিবাদে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির মন্ত্রী। রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী বলেছেন, নিজের ধর্ম নিয়ে নিজের পরিচয় দেওয়া সাংবিধানিক অধিকার। সেই বিষয়ে আমার কোনও মন্তব্য দেওয়ার অধিকার নেই। মানুষের সেই অধিকার নিয়ে কারও ফতোয়া দেওয়া চলে না। মন্ত্রী আরও বলেছেন, এটা পাকিস্তান নয়। এখানে ফতোয়া দিয়ে কোনও লাভ নেই। এটা ভারতবর্ষ।  এখানে কারও সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যায় না। নুসরাতের শপথগ্রহণ নিয়ে ফতোয়ার বিষয়ে সংবিধানের রক্ষাকর্তারা রয়েছেন। তারা নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবেন। আরেক বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রাচী বলেছেন, একজন মুসলিম নারী যদি একজন হিন্দুকে বিয়ে করে বিন্দি পরে, মঙ্গলসূত্র পরে তাহলে মৌলভীরা তাকে হারাম বলেন। আমি তাদের বুদ্ধির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। অথচ যখন একজন হিন্দু নারীকে লাভ জেহাদের নামে বিয়ে করে বোরখা পরতে বাধ্য করেন তখন সেটা হারাম হয় না। এমন বিতর্ককে নুসরাত খারিজ করলেও কট্টরপন্থীরা থেমে থাকবেন বলে মনে হয় না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর