ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে বিশ্বকাপের এক আসরে ৪০০ রান ও ১০ উইকেট নেয়ার রেকর্ডটা আগের ম্যাচেই গড়েন সাকিব আল হাসান। মঙ্গলবার ভারতের বিপক্ষে এক উইকেট ও ৬৬ রানের ইনিংস খেলে রেকর্ডটাকে আরো সমৃদ্ধ করেন তিনি। সাকিব আরেকটি অর্জনে নাম লিখিয়েছেন এদিন। কোনো সিরিজ/টুর্নামেন্টে সর্বাধিক রান এবং উইকেট নেয়া ক্রিকেটারের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এলেন সাকিব আল হাসান।
১৯৮০/৮১ মৌসুমে বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল ব্যাট হাতে ৬৮৬ রান ও বল হাতে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন। কোনো টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি রান ও উইকেট নেয়া ক্রিকেটারের তালিকায় সবার ওপরে তিনি। চ্যাপেলের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডস। বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজের ১৯৮১/৮২ মৌসুমে ৫৩৬ রান করেছিলেন ভিভ। পাশাপাশি বল হাতে ১১ উইকেট নেন তিনি।
তৃতীয় স্থানেও ভিত। ১৯৮৪/৮৫ ওয়ার্ল্ড সিরিজে ৬৫১ রান আর শিকার করেন ১৩ উইকেট। আর চলতি বিশ্বকাপে ১১ উইকেট ও ৫৪২ রান করে চ্যাপেল-ভিভদের কাতারে চলে এলেন সাকিব। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ২টি। ৭ ম্যাচের ৬টিই পঞ্চাশোর্ধ্ব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত না হলে সাকিবের নামের পাশে আরো কিছু রান ও উইকেট যোগ হতো। তবে হাতে আরেকটি ম্যাচ বাকি। সাকিবের তাই সুযোগ আছে রান ও উইকেট বাড়িয়ে নেয়ার।
ভিভদের অর্জনটা ছিল একটা ওয়ানডে সিরিজে। সাকিবেরটা বিশ্বকাপে। বাকি দুজনের তুলনায় তার অর্জনটা নিঃসন্দেহে বেশি মূল্যবান। আর পারফরম্যান্সের বিচারে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার যোগ্যতা রাখেন সাকিব। ২০১১ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন ভারতের যুবরাজ সিং। ফাইনালসহ ৯ ম্যাচে ৩৬২ রান আর ১৫ উইকেট নেন তিনি। আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ফিফটি ও ৫ উইকেট নেয়ার কৃতিত্ব দেখান যুবরাজ। যুবরাজের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই অর্জনে নাম তুলেন সাকিব। কিন্তু বাংলাদেশ দল ফাইনাল দূরে থাক সেমিফাইনালেও যেতে পারেনি। কাজেই টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার হিসাব-নিকাশ বদলে যেতে পারে শেষ মুহূর্তে। গতবার ২২ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন পেসার মিচেল স্টার্ক। আসরসেরার পুরস্কারও উঠেছিল তার হাতে। এবার তো ৮ ম্যাচেই ২৪ উইকেট নিয়ে ফেলেছেন। ভারতের ডানহাতি ওপেনার রোহিত শর্মাও আছেন। ৪ সেঞ্চুরি ও এক হাফসেঞ্চুরিতে ৫৪৪ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি।
প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে ১ হাজার রান ও ৩০ উইকেট আর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ৫০০ রান ও ১০ প্লাস উইকেট নেয়ার রেকর্ড দুটি সাকিবের। কিন্তু ব্যক্তিগত অর্জনের পরও বাংলাদেশকে শিরোপা জেতাতে না পারার দুঃখটা থেকেই যাবে তার।